কোনো কম্পিউটের স্কিল জানা দরকার ? Need to know a computer skill?
কোনো কম্পিউটের স্কিল জানা দরকার ?
যে কোন স্টুডেন্টের টাইপিং জানাটা অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয় । হতে পারে সেটা মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে তবে কম্পিউটারের হলে সবচেয়ে ভালো হয় কারণ টাইপিং বলতে এখনো পর্যন্ত মূলত আমরা কম্পিউটারের টাইপিংকেই বুঝে থাকি। আপনি যদি টাইপিংয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন আপনার লাইফটা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে । এবং এটা বলার মত একটা স্কিলও বটে, কারণ অনেক কম্পানিই এখন শুধু মাত্র টাইপিং স্পিডের উপর নির্ভর করে জব সার্কুলার দিয়ে থাকে । এমনকি সরকারি অনেক চাকুরিতে প্রধান স্কিল হিসেবে শুধু মাত্র টাইপিং স্পিডটাই মেটার করে। তাই এই স্কিলটি ডেভেলপ করতে পারলে আপনি যে কোন সময় যে কোন কম্পানিতে ছোট খাত একটি জবও পেয়ে যেতে পারেন অন্যান্য আরো হাজারও সুবিধা তো রয়েছেই। বেশিরভাগ সময়ই আমাদের সামান্য একটু ঘাফলতির কারণেই মূলত টাইপিং স্কিলটা আমাদের ডেভেলপ করা হয়ে উঠে না । আবার এমনও অনেকে রয়েছে যাদের বাসায় কম্পিউটার থাকার পরও টাইপিংয়ে তাদের স্কিল শূন্য।
ভাষার দক্ষতা
স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই বেশ কয়েকটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। আমরা যেহুতু বাঙালী তাই খুব স্বাভাবিক যে আমাদের ইতিপূর্বেই একটি ভাষায় দক্ষতা রয়েছে যেটি হলো বাংলা। তবে আমাদের পেশাগত লাইফে শুধু মাত্র বাংলা ভাষাটি যথেষ্ট নাও হতে পারে । কারণ আমরা জানি সারা পৃথিবীতে মাত্র ৩০ কোটি মানুষের ভাষা বাংলা। তাই আপনাকে এমন কয়েকেটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে যে গুলো সারা পৃথিবী ব্যাপি বিস্তৃত। আপনার পক্ষে যদি দুইয়ের অধিক ভাষা শেখা সম্ভব নাও হয় তাহলে কমপক্ষে ইংরেজি ভাষাটা মুটামুটি ভালোভাবে দক্ষ হয়ে উঠুন। আর এটা স্টুডেন্ট লাইফে করা সবচেয়ে সহজ। কারণ স্টুডেন্ট লাইফে অনেক বেশি সময় থাকে ।
রাইটিং স্কিল্স
যা ভাবছ, তা স্পষ্ট করে ভাষায় প্রকাশ করাটাও একটা দক্ষতা। তাই, যে কোনও ক্ষেত্রে যা লিখতে হবে, সে প্রজেক্ট রিপোর্টই হোক বা ক্লাস নোট্স, সব কিছুতেই যেন একটা পরিচ্ছন্নতা থাকে। বিশেষত, চাকরিতে যদি তোমাকে সহকর্মীর জন্য কোনও মেমো বা বস-এর জন্যে কোনও রিপোর্ট তৈরি করতে হয়, তা হলে বুঝতে হবে, কী লিখতে হবে, কতটা লিখতে হবে। কম কথায় সোজাসাপটা ভাষায় কোনও কিছু গুছিয়ে লেখার অভ্যাস করো। একই সঙ্গে মাথায় রেখো— লেখায় গ্রামার, পাংচুয়েশন, বানান যেন ঠিক থাকে।
লিসনিং স্কিল্স
এটাও এক দক্ষতা। যে কোনও কাজের জায়গাতেই যে অন্যের কথা মন দিয়ে শোনে, অর্থাৎ যে ‘গুড লিসনার’, তার বা তাদের গুরুত্ব অন্য রকম। তাদের কিন্তু সংস্থায় প্রোডাকটিভ ওয়ার্কার হিসেবে দেখা হয়। কারণ তুমি যদি চট করে কোনও কথা শুনে বুঝে যাও তোমার কাছ থেকে কী চাওয়া হচ্ছে, তা হলে তোমারই কাজের সুবিধে। এতে বস-এর নেকনজরে পড়বে, সহকর্মীদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি হবে। ব্যক্তিগত জীবনেও এই অভ্যেস তৈরি করতে পারলে, জীবনে নানান সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং অন্যান্য মানুষকে বোঝার অনেক সুবিধে হয়। তবে সবাই যে গুড লিসনার হয় তা নয়। আবার অনেক সময় যাঁদের মনে করা হয় গুড লিসনার, তাঁরাও এমন আচরণ করেন, দেখে মনে হবে তিনি কোনও মনোযোগই দিচ্ছেন না। যাঁরা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনেন তাঁরা দেখবে কয়েকটা জিনিস করেন। যেমন, চোখে চোখ রেখে কথা বলা। অন্য ব্যক্তি যখন কথা বলেন, তখন তাঁর কথার মধ্যে কথা না বলা। অযথা উসখুস না করা। কথার মাঝে মাথা নাড়া। বক্তার দিকে সামান্য ঝুঁকে বসা। বক্তার কথা শেষ হয়ে গেলে তবেই প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা।
ভার্বাল কমিউনিকেশন
কাজের জায়গা হোক বা অন্য কোথাও, তুমি কী বলতে চাইছ সেটা স্পষ্ট করে বলা, কোন টোন-এ বলছ, কথা বলার সময় তোমার বডি ল্যাংগোয়েজ কেমন হচ্ছে, অনেক কিছুই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই যখন কোনও কিছু নিয়ে কথা বলছ, সে বিষয়ে তোমার কী বক্তব্য, তা নিজের কাছে যেন পরিষ্কার থাকে। অনেকে খুব তাড়াতাড়ি কথা বলেন। আবার কারও কারও কণ্ঠস্বর এমনই যে কথা বোঝাই যায় না। ভার্বাল কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে কিন্তু তোমাকে খুব স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে হবে, যাতে অন্যরা বুঝতে পারেন। একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, ভাষা যেন হয় সহজ-সরল। আলঙ্কারিক ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে অন্য ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করতে পারো তিনি তোমার কথা বুঝতে পারছেন কি না। এতে তোমাদের মধ্যে কমিউনিকেশনেই সুবিধে হবে।
অর্গানাইজেশনাল স্কিল্স
কিছু মানুষ থাকেন, যাঁরা খুব গুছিয়ে কাজ করতে পারেন। এ ধরনের স্কিল যাঁদের থাকে, তাঁরা দেখবে কোনও হুড়োহুড়ি না করেই যে কোনও কাজ করে ফেলতে পারেন। একাধিক অ্যাসাইনমেন্ট খুব স্বচ্ছন্দে করে ফেলতে পারেন এবং তাদের কাজে ভুলও থাকে নামমাত্র।আমরা অনেকেই গুছিয়ে কাজ করতে পারি না। কিন্তু কয়েকটা জিনিস করলেই এই অভ্যাস তৈরি করে ফেলা যায়। প্রথম কাজই হল কাজের একটা তালিকা তৈরি করা। এ বার কোন কাজটা বেশি গুরুত্বের আর কোন কাজটা কম গুরুত্বের, সেটা ভাগ করে নাও। যেমন যেমন কাজ শেষ করছ, টিক মারতে থাকো। স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা হাতে লেখার নোটবুক— যেটাতে তোমার সুবিধে, এই তালিকা বানিয়ে রাখো। প্রত্যেকটা কাজের জন্য একটা ডেডলাইন করে রাখো ক্যালেন্ডারে। দরকারে রিমাইন্ডার দাও। একটা রুটিন ফলো করো।
Graphic Designing:
আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছর জুড়েই কোনো না কোনো ইভেন্টের আয়োজন করা হয়৷ ইভেন্টের প্রচারণার জন্য প্রয়োজন ম্যাগাজিন, ব্যানার ও পোস্টার৷ আর তুমি যদি কম্পিউটারে Adobe Photoshop আর Adobe Illustrator ব্যবহারে পারদর্শী হয়ে থাকো, তাহলে তোমাকে আর ঠেকায় কে? এসব কাজের জন্য সবার আগে কিন্তু তোমাকেই ডাকা হবে!
আজকাল যেকোনো কাজের জন্য এমন মানুষদের রিক্রুট করা হচ্ছে, যাদের ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর সম্পর্কে অন্তত সাধারণ জ্ঞানটুকু আছে। তাই বোঝা যাচ্ছে যে আজকাল এই দুটি সফটওয়্যারের কাজে পারদর্শী মানুষের চাহিদা কেমন। এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ ঘটে। সেই সাথে ক্যারিয়ার গঠনের বিভিন্ন পথ খুলে যায়। আমাদের জীবনে ফটোশপের নানা ব্যবহার রয়েছে। যা ক্যারিয়ার তৈরি ছাড়াও পার্টটাইম চাকরি খুঁজে পাওয়ার সহায়ক।
যদি এই সফটওয়্যারগুলো না থাকে, তবে এমনি অনেক বিনামূল্যের এডিটিং সফটওয়্যার এবং টুল পাওয়া যায়। এই দক্ষতা অর্জন করলে নিজের ফেসবুকের ছবিগুলোও হয়ে উঠবে অন্য সবার চেয়ে আকর্ষণীয়। এমনকি প্রেজেন্টেশনেও এই স্কিল কাজে আসবে। তুমি বিভিন্ন ইফেক্ট ও ভিডিও ক্লিপ ব্যবহারের মাধ্যমে তোমার প্রেজেন্টেশনটি হয়ে উঠবে অন্যদের কাছে সহজবোধ্য ও আলাদা।
বেসিক কম্পিউটার হার্ডওয়্যার:
কম্পিউটার বা ফোনের কোনো পার্টস নষ্ট হয়ে গেলে, সেটা ঠিক করার অন্তত বেসিক উপায়টা শেখা জরুরি। আমাদের জানা উচিত যে কীভাবে সফটওয়্যার কিনতে হয় এবং ব্যবহার করতে হয়। এছাড়াও পিসি কীভাবে পরিষ্কার রাখতে হয় এবং ভাইরাসমুক্ত রাখা যায় সেটাও জানতে হবে। র্যাম, হার্ডডিস্ক, বেসিক ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস সম্পর্কেও ধারণা রাখা প্রয়োজন।
এসব টুকটাক কাজ নিজেরা জানলে নিজের মনিটর বা ফোন নিয়ে দোকানে দোকানে ছোটা লাগবে না। টাকাও বেঁচে যাবে। আর সেই বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে তুমি চাইলেই নিজের পছন্দমতো একটা বই কিনে ফেলতে পারবে।
অনলাইনে কাজ করা:
আজকাল এমন অনেক ধরণের কাজ তৈরি হচ্ছে, যা ঘরে বসেই করা যায়। যেমন: freelancing, online business, blogging, marketing, copywriting, ইত্যাদি। সেইসব কাজ করার জন্য প্রয়োজন নিজের ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ। তাই অনলাইনে কাজ করতে হলে কিন্তু কম্পিউটার স্কিল গুলো আয়ত্ত করার প্রয়োজন আছে!
রিসার্চ:
রিসার্চ অর্থ অনুসন্ধান করা। বিভিন্ন ওয়েব ব্রাউজারে কোনো বিষয় সার্চ দিয়ে তা নোট করাকেই রিসার্চ বলে৷ যেমন: কেন এইটা হয়? কী জন্য হয়? এটা হলে লাভটা কী? রিসার্চ মানে এই না যে, শুধুই এসাইনমেন্টের জন্য ডাটা কালেক্ট করা। রিসার্চ অর্থ সত্য উদঘাটন করাও বটে! রিসার্চ তখনই করা লাগে, যখন কেউ কোনো সমস্যার সমাধান খোঁজে। কোনো প্রজেক্ট তৈরি করার জন্যেও রিসার্চ করা লাগে।
এই স্কিলগুলো অর্জন করলে তুমি তোমার সমবয়সীদের তুলনায় সব ক্ষেত্রেই বেশ এগিয়ে থাকবে। এইসব বিষয় অনেক সময় নিজে নিজেই শেখা যায়। আবার তুমি চাইলে এগুলো নিয়ে কোর্সও করতে পারো। তোমার এলাকার আশেপাশে যদি ‘যুব কল্যাণ সমিতি’ খুঁজে পাও, সেখানে ভর্তি হয়ে যেকোনো একটার উপর কোর্স করে ফেলো। এগুলো সরকারি হওয়াতেও খরচটাও একটু কম। আর পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আছে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা। এই সার্টিফিকেট তুমি পরবর্তীতে অনেক জায়গায় কাজে লাগাতে পারবে।