গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্যাসিক নিয়ম
গ্রাফিক্স ডিজাইনের ব্যাসিক নিয়ম
গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স করে গ্রাফিক্স ডিজাইন হওয়া যায়। এখন, আপনি যদি অনলাইনে কিংবা অফলাইনে ফ্রি গ্রাফিক্স ডিজাই কোর্স খুঁজে থাকেন অথবা কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হবেন। তাহলে, এই লেখাটি আপনার জন্য।
বর্তমানে চাকরির বাজারে গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই যাচ্ছে৷ গ্রাফিক্স ডিজাইন আর কম্পিউটার ফান্ডামেন্টালস এই দুটি স্কিল যার থাকে, সে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে খাকে বহুগুনে। গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চাই আমরা কমবেশী সবাই, কিন্তু সবাই কি শেখার সুযোগ পাই?
কোথাও হয়তো বাজেটে মেলে না, আবার কোন প্রতিষ্ঠান থেকে যদি শিখতে চাই, তাহলে দেখা যায় যে যাতায়াত ব্যবস্থাটা ঠিক সুবিধার হয় না৷ এই লকডাউনের সময় সবাই এখন ঘরে বন্দি, কাজেই এই সময়ে অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনটা শিখে নিলে খুব একটা খারাপ হয় না। আরো ভাল হয় যদি অনলাইনে ফ্রিতে শেখা যায়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপাদান
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চাইলে আপনাকে আগে এর উপাদানগুলো সম্পর্কে ভালমত জানতে ও বুঝতে হবে। আগেই বলেছি গ্রাফিক্স ডিজাইনে ভিজ্যুয়ালি একটা মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করা হয়। সুতরাং মেসেজের সফল ডেলিভারির জন্য ডিজাইনের উপাদানগুলোর সঠিক ব্যবহার জরুরি। এই সেকশনে আমরা সেই উপাদানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
১. গ্রাফিক্স ডিজাইনে কালার
রঙের প্রকারভেদ, ব্যবহার, এবং প্রয়োগের খুঁটিনাটি সব জানতে হবে৷ বিশেষ করে রঙের সাইকোলজিক্যাল ব্যবহার সম্পর্কে জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন
- কালো রং হচ্ছে অশুভ কিছুর ইঙ্গিত, আবার কালো রং মানেই এইডসের সংকেত।
- গোলাপি রং মানে ভালবাসার রং, আবার এই একই রং দ্বারা সুস্থ-সবল বোঝানো হয়, স্তন ক্যান্সারের সাথেও গোলাপি রং জড়িত।
- আবার উজ্জল বা অনুজ্জ্বল রংয়ের ব্যবহারেও ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করা যায়। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, রঙের সাইকোলজিক্যাল ব্যবহার মেসেজ তৈরি ও ডেলিভারিকে ত্বরান্বিত করে দ্রুত।
২. গ্রাফিক্স ডিজাইনে লাইন
৩. গ্রাফিক্স ডিজাইনে শেইপ
শেইপ তৈরি হয় লাইন দিয়ে। এটা টু-ডাইমেনশনাল এরিয়া। বৃত্ত, চতুর্ভুজ, আয়তক্ষেত্র ইত্যাদি জ্যামিতিক শেইপ দিয়ে ডিজাইন তৈরি করা যায়৷ আবার নির্দিষ্ট আকার-আকৃতি বিহীন শেইপ দিয়েও ডিজাইন বানানো সম্ভব। জ্যামিতিক শেইপের ডিজাইন দিয়ে একরকম অর্থ হয়, আবার আকৃতিবিহীন শেইপের ডিজাইন অন্য ধরণের অর্থ বহন করে।
৪. ডিজাইনে টাইপোগ্রাফি
টাইপোগ্রাফি বলতে মূলত অক্ষরের বিন্যাসকে বোঝায়। ফন্ট সাইজ, ফন্ট কালার, ফন্ট স্পেসিংয়ের উপর মেসেজের কার্যকারিতা নির্ভর করে। একটা মেসেজকে সহজে এবং অল্প সময়ে দর্শকের কাছে ইফেক্টিভ করার জন্য টাইপোগ্রাফি হল সবচেয়ে জরুরি।
৫. ডিজাইনে সাইজ
সাইজ অনুসারে মেসেজের অর্থ ভিন্ন হয়। গ্রাফিক্স ডিজাইনে বড় সাইজ মানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং ছোট সাইজ মানে কম গুরুত্বপূর্ণ বোঝায়। আবার পাশাপাশি বড় ছোট সাইজ থাকলে একটা ভিন্ন ধরণের অর্থ তৈরি হয়।
৬. ডিজাইনে স্পেস
এটা আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একটা মেসেজ ঠিক কতটা কার্যকরী হবে, সেটা নির্ভর করে একটা ডিজাইনে উপাদানগুলো কিভাবে সাজানো থাকবে।
একজন ডিজাইনার চাইলেই তার ডিজাইনের উপাদানগুলোকে বামপাশে, ডানপাশে, মাঝখানে, বা কোণাকুণিভাবে সাজাতে পারেন। সঠিক স্পেসিং ডিজাইনে একটা আলাদা মাত্রা এনে দেয়।
ওয়েব ডিজাইনের সাথে আরো দুটি জিনিস সম্পর্কিত:
- UX ডিজাইন
UX মানে User Experience। এই UX ডিজাইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইউজার বা কাস্টমারের সন্তুষ্টি। একটা প্রোডাক্টের মান উন্নয়ন করার সাথে সাথে প্রোডাক্টটা সম্পর্কে কাস্টমার যেন সহজে জানতে পারে, ব্যবহার করতে পারে, বা সমস্যা থাকলে যেন জানাতে পারে ইত্যাদি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। মোট কথা, কাস্টমারের রিভিউ নিশ্চিত করাই UX ডিজাইনের কাজ। একটা ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় UX ডিজাইনের প্রতি খেয়াল রাখতে হয়।
- UI ডিজাইন
UI বা User Interface আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার৷ ওয়েবসাইটের ইন্টারফেইস যদি সহজে ব্যবহার করা না যায়, যতই গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট হোক না কেন, সেটা ইউজার পর্যন্ত যাবেনা। কাজেই ওয়েবসাইটের ইন্টারফেইসকে ইউজার-ফ্রেন্ডলি করাটাই হচ্ছে UI ডিজাইন।
Canva দিয়ে এডিট :
Adobe এর পরেই মানের দিক থেকে Canva সেরা। এটাতে ইমেজ এডিট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন দুটোই করা যায়। এই সফটওয়্যারটা মূলত টেমপ্লেট-বেইজড ডিজাইনের জন্য বেশি ভাল।
সহজে টেমপ্লেট খোঁজা ও বাছাই করার জন্য সার্চবার রয়েছে। এখানে drag-and-drop অপশনের মাধ্যমে পছন্দের ডিজাইন নিয়ে কাজ করার সুবিধা আছে। বিগিনারদের জন্য Canva ভাল একটা টুল।
মোবাইল অ্যাপ ও কম্পিউটার সফটওয়্যার – দুইভাবেই Canva ডাউনলোড করা যাবে। আবার এটা ফ্রি ও পেইড ভার্সনও আছে। ফ্রি ভার্সনেই ২,৫০,০০০ এর বেশি টেমপ্লেট ও ৫ জিবি স্টোরেজ পাওয়া যায়।
পেইড ভার্সনে সবকিছু আনলিমিটেড। Canva ব্যবহারের আগে মেইল দিয়ে সাইন আপ করতে হয়। অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স করার ক্ষেত্রে CANVA নিয়ে কোর্স করানো হয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে যে অফশন গুলো আগে জানতে হবে-
- টুলবক্সের যাবতীয় টুল গুলোর কাজ পুংখানু পুংখানু ভাবে শিখতে হবে।
- বিভিন্ন ধরনের প্যালেট গুলোর ব্যবহার জানতে হবে।
- কাস্টমাইজড ইলাস্ট্রেটর সর্ম্পকে
- ডকুমেন্ট সেটআপ
- ফ্রিফারেন্স সেট করা
- ফন্ট সর্ম্পকে
- ফিল্টারিং
- কালার ম্যানেজমেন্ট
- সাইজ
- ফরমেট
- রেজলুশন
- ফোরগ্রাউন্ড
- ব্যাকগ্রউন্ড
পরিশেষে,
ডিজাইন কোর্স নিয়ে আজ এই পর্যন্তই। এই পোস্টে গ্রাফিক্স ডিজাইনের আদ্যোপান্ত সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে। গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে আপনাদের কোন মূল্যবান মতামত বা পরামর্শ থাকলে শেয়ার করতে পারেন আমাদের সাথে।
আরো পড়ুন: