
ব্লগিং কনটেন্ট কি? কত প্রকার ও কি কি ?
ব্লগিং কনটেন্ট কি? কত প্রকার ও কি কি ?
কন্টেন্ট রাইটিং হলো পেশাদার মার্কেটিং এর জন্য এক ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করার কাজ যা নির্দিষ্ট অনলাইন বা অফলাইন পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হয়। কন্টেন্ট রাইটিং অনেকের কাছে আর্টিকেল রাইটিং নামেও পরিচিত।
কন্টেন্ট রাইটিং প্রায় সকলের কাছে পরিচিত শব্দ হলেও অনেকেই আমরা কন্টেন্ট রাইটিং কি সেসম্পর্কে বিস্তারিতভাবে খুব কমই জানি। তবে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করার উপায় তৈরি হওয়ার পর থেকে মানুষ এসম্পর্কে জানতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
কখনো কি কেউ চিন্তা করেছিল যে বই প্রকাশ না করে বিভিন্ন ছোট ছোট কন্টেন্ট লিখেও আয় করা সম্ভব হবে? মনে হয় না। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে তত বেশি বদলে যাচ্ছে পৃথিবী, বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনভঙ্গী এবং সেইসাথে কাজের বিস্তৃতি।
বর্তমানের স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, কর্মজীবী মানুষ সবাই এখন কাজের পাশাপাশি বাড়তি আয় করতে চায়। আর তাদের জন্য চমৎকার একটি কাজ হলো কন্টেন্ট রাইটিং।
তাই কন্টেন্ট রাইটিং এ ক্যারিয়ার যারা গড়তে চান তাদের জন্যই আজকের গাইডলাইন, যেখানে কন্টেন্ট রাইটিং কি, কিভাবে কন্টেন্ট রাইটার হওয়া যায়, রাইটার এর কাজ, যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করার উপায় সহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো ইন-শা-আল্লাহ।
কন্টেন্ট রাইটিং কত প্রকার?
কন্টেন্ট রাইটিং এর জন্য আলদা কিছু প্রকারভেদ আছে। যেমন ইন্টারনেটে এমন প্রচুর প্লাটফর্ম আছে যেখানে বিভিন্ন রকমের কন্টেন্ট পাবলিশ করা হয়।
ফলে বিভিন্ন প্লাটফর্মের চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন রকমের কন্টেন্ট তৈরি করা হয়। একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসাবে আপনি নিজের রুচি মতো আলদা আলদা ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন যেমনঃ
- Blogging writing
- Copy writing
- Social media writing
- News writing
- Creative writing
- Expert writing
Blogging writing কি ?
এখানে সরাসরি কিছু বিষয়ের উপার বিস্তারিতভাবে আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করতে হয়। মূলত শর্ট বা লং তথ্য বহুল দুই ধরনের আর্টিকেল বা কন্টেন্ট লেখা হয় ব্লগিং এর জন্য।
Copy writing কি ?
কপি রাইটিং মূলত একটি কোম্পনির মার্কেটিং বা প্রচার করার জন্য এই ধরনের কন্টেন্ট লিখতে হয়। এই আর্টিকেল লেখার মুল উদ্দেশ্য হল ব্র্যান্ডের গুণমান সম্পর্কে মানুষের মাঝে প্রচার করে কেনার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলা।
Social media writing কি ?
একটি কোম্পানি তাদের প্রডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার বা মার্কেটিং করার জন্য অনলাইনে ব্র্যান্ড তৈরি করে। সোশ্যাল মিডিয়াতে পেজ বা গ্রুপ তৈরি করে ছোট ছোট মজার আকর্ষণীয় কন্টেন্ট লিখেন বা পাবলিশ করে থাকে।
News writing কি ?
নিউজ রাইটিং নিউজ এর সাথে জড়িত সকল খবর গুলো লেখা হয়। এখানে ছোট ছোট শর্ট আর্টিকেল হিসাবে দৈনন্দিন জীবনের ঘটনা বলি নিয়ে লেখা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন নিউজ, সোশ্যাল মিডিয়া নিউজ পেজ, নিউজ ওয়েবসাইট গুলোতে নিউজ রাইটিং করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া বর্তমান সময়ে অনলাইন ব্যবসা গুলোর প্রচার, ব্র্যান্ডিং, বা মার্কেটিং করার উদ্দেশ্যে এই ধরনের কন্টেন্ট রাইটিং প্রচুুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। আর তাই আপনি নিজের পছন্দমত এ বিষয়ে কন্টেন্ট রাইটিং করতে পারবেন।
Creative writing কি ?
যে লেখার মাধ্যমে একজন রাইটার নিজের ক্রিয়েটিভি প্রদর্শন করে থাকে সেই রাইটিংকে ক্রিয়েটিভ রাইটিং বলে।
Expert writing কি ?
একজন বিশেষজ্ঞ রাইটাররা যখন যেকোন বিষয়ে রিচার্স করে সম্পূর্ন ডিটেলস সহ লেখেন তখন তাকে এক্সপার্ট রাইটিং বলা হয়।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হব ?
- বাংলায় লিখতে চাইলে বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণের উপর ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
- ইংরেজিতে লিখতে চাইলে ইংরেজি ভাষা ও ব্যাকরণের উপর ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
- কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা করার দক্ষতা থাকতে হবে।
- টেকনিক্যাল বিষয়ে লিখতে হলে সে বিষয়ের উপর দীর্ঘমেয়াদি পড়াশোনা থাকা প্রয়োজন। যেমনঃ ইতিহাসের ছাত্র হয়ে থাকলে মেডিকেল প্রযুক্তি নিয়ে লেখা আপনার জন্য খু কষ্টসাধ্য হবে।
- লেখার ভেতর বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে পারা কনটেন্ট রাইটারের অন্যতম গুণ।
- অনলাইনে কাজ করার জন্য কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (যেমনঃ ওয়ার্ডপ্রেস) আর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও (SEO) নিয়ে ভালো ধারণা থাকলে আপনার গ্রহণযোগ্যতা অনেক গুণ বেড়ে যাবে।
- সঠিক বানানে দ্রুত লেখার অভ্যাস।
- সহজেই বোঝা যায় এমনভাবে লেখার ক্ষমতা থাকতে হবে।
কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং শিখবেন ?
কন্টেন্ট রাইটিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রচুর অধ্যাবসায় করা, গবেষণা করা আর লেখালেখি নিয়ে চর্চা করা। লেখার মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে চাইলে বিভিন্ন লেখকের ও বিভিন্ন বিষয়ের বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে। কাজ শেখার জন্য ইন্টারনেট হল অন্যতম একটি মাধ্যম।
বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম (যেমনঃ Coursera) লেখালেখির উপর বিভিন্ন ফ্রি অনলাইন কোর্স ও সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। এছাড়া আউটসোর্সিং সম্পর্কিত বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্স করার ব্যবস্থা রয়েছে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে।
কনটেন্ট রাইটিং কাজ কিভাবে পাবেন ?
বিভিন্নভাবে আপনি কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ পেতে পারেন। তবে এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ পাবার সুযোগ গুলো আপনাদের বলবো সেগুলো হলঃ
- ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট থেকে
- জব ওয়েবসাইট থেকে
- ফেসবুক গ্রুপ থেকে
কন্টেন্ট রাইটিং কত প্রকার ?
মিডিয়ার উপর ভিত্তি করে কন্টেন্ট রাইটিংকে প্রধাণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়:
- অফলাইন কন্টেন্ট রাইটিং, এবং
- অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং
একজন কন্টেন্ট রাইটারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে ?
পত্রিকা বা অনলাইন পোর্টালগুলোতে এন্ট্রি লেভেলে কন্টেন্ট রাইটার হিসাবে যোগ দিলে। পরে সিনিয়র রাইটার অথবা সাব-এডিটরের পদে উন্নীত হবেন। সব থেকে ভাল ক্ষেত্রে চীফ এডিটর হিসাবে নিয়োগ পেতে পারেন। আর অ্যাড এজেন্সিতে কাজ করলে ৪ থেকে ৫ বছর পর মার্কেটিং ম্যানেজার বা সিনিয়র কপিরাইটারের পদ পাবার সুযোগ থাকবে।
সত্যি কথা বলতে কন্টেন্ট রাইটিংয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে পদের কোন বিষয় নেই। তবে পোর্টফোলিও অনেক ভাল হলে বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ আসতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় যে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেকেই কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করে থাকেন এবং প্রচুর পরিমাণ ইনকাম করেন। এছাড়া একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কোন কোম্পানিতে কাজ করলেও ভালো বেতন পাওয়া যায়। আমার মতামত হল আপনি প্রথমে কোন একটি কোম্পানিতে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করলে।
আপনার অভিজ্ঞতা অনেক বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হবে। এরপর ধীরে ধীরে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। এতে করে আপনি একসময়ে ভাল একটি অবস্থানে যেতে পারবেন।
শেষ কথা,,
কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করার আগে আপনার জন্য একটি কথাই বলবো, লেখালেখি সবার জন্য সফলতা বয়ে আনে না।
আপনি যদি নতুন নতুন জ্ঞান আহরণ করতে এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করতে প্রবল আগ্রহী হন, তাহলে আপনাকে কন্টেন্ট রাইটিং দুনিয়ায় স্বাগতম।
লেখাটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন ।
আরো পড়ুন: