
ব্লগিং কাকে বলে ? কেন ব্লগিং শুরু করা উচিৎ ?
ব্লগিং কাকে বলে ? কেন ব্লগিং শুরু করা উচিৎ ?
ব্লগিং হল সারা বিশ্ববাসীর মাঝে নিজের মত প্রকাশের একটি খোলা মাধ্যম। গল্প-কবিতা থেকে শুরু করে নানাবিধ নিউজ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্লগিং এর যাত্রা। বর্তমানে যেহেতু মানুষজন ইন্টারনেটে প্রচুর পরিমাণে সার্চ করে। বই, পত্র-পত্রিকা, প্রবন্ধ-রচনা, দৈনিক খবর সহ সকল কিছুই রয়েছে এখন ইন্টারনেটে।
আবার কেউ কেউ তাদের শখ এবং প্রতিভাকে বিকাশ করছে ইন্টারনেটে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে। এসমস্ত লেখালেখি ছাড়াও বর্তমানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু আইডিয়া ব্লগিং কে ঘিরে। অর্থাৎ ব্লগিং এখন অনলাইনে আয় করার অন্যতম এবং সহজতম একটি মাধ্যম।
ব্লগিং কে ঘিরে বর্তমানে শুরু হয়েছে নানা রকমের আধুনিক পেশা এবং ব্যবসা। এবং এটি বর্তমানে ইন্টারনেট দুনিয়ায় অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে। যদি কেউ অনলাইন থেকে খুব সহজে বা অল্প সময়ে ইনকাম করার ইচ্ছা করে তাহলে তারা প্রথমত ব্লগিং পেশাকে বেছে নিয়ে থাকে। একে নিজের একটি আয়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে চাইলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই শিখে নিতে হবে বেশ কিছু কৌশল।
ব্লগিং কি ?
ব্লগিং হলো ইন্টারনেট জগতে ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন ব্লগের মাধ্যমে নিজের মতামত, অভিমত, অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও নানা রকমের দক্ষতা প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম। সহজ ভাষায় ইন্টারনেটে কোনো বিষয় নিয়ে লেখালেখি করাকেই ব্লগিং বলে।
অর্থ আয়ের পথ হতে পারে ব্লগিং
ব্লগিং হতে পারে অনলাইনে আয় করার অন্যতম একটি মাধ্যম এবং হতে পারে আপনার পেশা। কেননা ব্লগিং করে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অনলাইন থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা আয় করা যায়।
বর্তমানে আউটসোর্সিং যারা করছেন তাদের মাঝে বড় একটি অংশই আয় করছেন ব্লগিংয়ের মাধ্যমে। এটি এমন একটি পেশা যেটা একবার কাজ করলে সারাজীবন সেখান থেকে আয় করা যায়।
উদাহরণস্বরূপঃ আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে সেখানে আপনি একটি মাত্র আর্টিকেল লিখেন এবং শেয়ার যতদিন আপনার ওয়েবসাইটে থাকবে ততদিন পর্যন্ত ভিজিটররা সেই আর্টিকেলকে পড়বে। এবং সে আর্টিকেল থেকে আপনি সারাজীবন আয় করতে পারবেন।
ব্লগিং করে আয় করার কিছু জনপ্রিয় মাধ্যমঃ
- গুগল এডসেন্স
- এফিলিয়েট মার্কেটিং
- স্পনসর করে আয়
- ই-কমার্স
- প্রোডাক্ট রিভিউ
ব্লগিং এর মাধ্যমে নতুন কিছু শেখা যায়
ব্লগিং যেহেতু ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখি করতে হয় তাই লেখার সময় অনেক কিছু রিসার্চ ও পড়াশুনা করে যে কোন বিষয় লিখতে হয়। আর যখন একটি বিষয়ে কোন ব্লগার লেখালেখি করে সেই বিষয়টা সম্পর্কে তার সুস্পষ্ট ধারনা থাকতে হয়। তাই লেখার আগে প্রচুর পড়াশুনা করতে হয়। এর দ্বারা নিত্য নতুন অনেক কিছু শেখা যায়।
ব্লগের প্রকারভেদ
কোন ব্লগে কি ধরনের পোস্ট দেওয়া হয় তার উপর ভিত্তি করে ব্লগকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটি হল:
১. ব্যাক্তিগত ব্লগ
এখানে ব্যাক্তি কোন একটি বিষয়ের উপর তার মতামত পোষ্ট আকারে তুলে ধরেন এবং পাঠকদের সাথে এর উপর মতামত আদান প্রদান করেন। এই ধরনের ব্লগে সাধারনত কোন ব্যক্তি তার প্রতিদিনের জীবন যাত্রা এবং তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করে।
ব্যক্তিগত ব্লগ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ ধরণের ব্লগ ব্লগার তার নিজের শখ থেকে করে থাকে। তাদের ব্লগ কেউ পড়ুক বা না পড়–ক এতে তাদের কোন আসে যায় না। নিজের আনন্দ লাভ করা এ ধরণের ব্লগের মূল উদ্দেশ্য।
২. সামাজিক ব্লগ
সামাজিক ব্লগ হল এমন ব্লগ সাইট যেখানে বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের মতামত বা মুক্ত চিন্তা তুলে ধরতে পারে। একজন ব্যক্তি একটি পোষ্ট দেবার পর উক্ত ব্লগের অন্যান্য ব্লগাররা তার পোষ্টর উপর মন্তব্য করতে পারে। যেমন- সামহয়্যারইন ব্লগ, আমার ব্লগ ইত্যাদি সামাজিক ব্লগের অন্তর্ভূক্ত।
৩. ব্যবসায়িক ব্লগঃ
কোম্পানী/ প্রতিষ্ঠান তাদের কোন পন্য বা সেবার উপর নতুন নতুন তথ্য প্রদান করেন এবং পাঠক তাদের মতামত প্রদান করতে পারেন। এ ধরনের ব্লগ সাধারণত কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের পন্যের প্রচার বা গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে করে থাকে।
৪. প্রশ্ন ব্লগ :
প্রশ্ন ব্লগে ব্লগার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। এই প্রশ্ন কোন ফর্ম বা ই-মেইলের মাধম্যে ব্লগাদের কাছে পৌছান হয়।
৫. খবর ব্লগ:
যে সকল ব্লগে বিভিন্ন সাম্প্রতিক খবরের উপর বিশ্লেষন স্থান পায় তাদেরকে খবর ব্লগ বা News Blog বলে।
আরো কয়েক ধরনের ব্লগ বর্তমানে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যেমন মাইক্রো ব্লগ, টুইটার এমন একটি ব্লগ। এটি ব্যক্তিগত ব্লগের ভেতরেও পরে। এখানে কোন ব্লগার এখন কি করছেন বা ভাবছেন তা অতি সংক্ষিপ্ত আকারে লিখে থাকেন।
ব্লগিং করে ভালো লেখক হয়া যায়
ব্লগিং করতে হলে একজন লেখক এর একটি লেখাকে খুব সুন্দর ভাবে সচ্ছলভাবে সাজিয়ে তুলতে হয়। যখনই একজন ব্লগার একটি লেখাকে খুব সুন্দর করে সৃজনশীলতার সাথে কোন লেখাকে লেখে এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর সৃজনশীল আইডিয়া।
আর একজন ব্লগার প্রায়ই তাকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লিখতে হয় আর একজন ব্লগার লিখতে লিখতে এক সময়ে খুব ভালো লেখকে পরিনত হয়ে যায়।
প্রচুর পরিমাণে রিচার্জ এবং লেখা লিখতে লিখতে এমন কিছু আয়ত্তে চলে আসে পরবর্তীতে যে কোন বিষয়ের উপর লিখতে বললে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক সৃজনশীল লেখা লিখে ফেলতে পারে একজন ব্লগার।
তাই নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে একজন ব্লগার খুব ভালো পরিমাণে লেখক হতে পারে। এমনও দেখা গেছে যে অনেক ব্লগার প্রথম অবস্থায় ব্লগিং করে পরবর্তীতে ভালো লেখক হিসেবে সেলিব্রিটি হয়ে গেছেন। এবং তাদের লেখা বিভিন্ন প্রবন্ধ বই সারাবিশ্বে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
ব্লগিং হলো নিজের মতামত প্রকাশ করার জনপ্রিয় একটি মাধ্যম
ব্লগিংয়ের মাধ্যমে নেচার নিজের চিন্তা চেতনা এবং বিভিন্ন সমাজে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনাবলী তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম।
ব্লগিংয়ের মাধ্যমে সহজেই যেকোনো একটি অপপ্রচার বা যেকোনো একটি কাজের বিরুদ্ধে লেখালেখি করে সেটি খুব সহজেই বন্ধ করা সম্ভব। এবং বিভিন্ন সমাজে ঘটে যাওয়া কুসংস্কার সমূহকে খুব সহজে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে সে তার প্রতিকার করা সম্ভব। ব্লগ এবং ব্লগিং এর মাধ্যমে বর্তমানে এরকম অসংখ্য ঘটনা করা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়াও ব্লগিংয়ের মাধ্যমে একজন সমাজের বিরুদ্ধে লোককে খুব সহজে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব কেননা ব্লগিংয়ের মাধ্যমে খুব সহজে একটি কমিউনিটি তৈরি করা যায়। এবং এই কমিউনিটিকে একজন অপরাধী চাইলেই ধ্বংস করতে পারে না কেননা এর ব্যাপকতা অনেক দূর পর্যন্ত।
ব্লগিং সহজে শুরু করা যায়
বর্তমান সময়ে ব্লগিং এর চাহিদা অর্জন করার প্রধান কারণ হচ্ছে এটি খুব সহজলভ্য একটি বিষয়। যে কেউ চাইলেই খুব সহজেই তার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারে। এর জন্য অত কিছু ভাবার প্রয়োজন নেই শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সৃজনশীল আইডিয়াগুলোকে যুক্ত করার মাধ্যমে শুরু হতে পারে একজন ব্লগারের ব্লগিং লাইফ।
ব্লগিং পেশাটা অত্যন্ত সহজলভ্য এবং খুব সহজে অল্প খরচে বাড়িতেও শুরু করা সম্ভব। ফ্রিতে ব্লগিং শুরু করতে হলে আপনাকে এই আর্টিকেলটি পড়তে হবে। ফ্রিতে ব্লগিং শুরু করুন।
জনপ্রিয়তা অর্জন
আপনি যদি ব্লগিং শুরু করেন এবং ব্লগের মাধ্যমে আপনার নানাবিধ চিন্তা-চেতনাকে বিকাশ করতে থাকেন তাহলে দেখবেন অল্পসময়ের মধ্যেই বিভিন্ন প্লাটফর্মে আপনার একটি জায়গা তৈরি হয়ে গেছে। অনলাইনে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন একটি কমিউনিটি। অল্প সময়ে আপনার অনেক ফ্যান এবং ফলোয়ার তৈরি হয়ে যাবে যারা আপনাকে ফলো করতে থাকবে। এমনকি ব্লগিংয়ের মাধ্যমে অনেক কঠিন কঠিন বিষয়গুলোকে সহজলভ্য ভাবে সমাধান করা সম্ভব হয়।
সহজেই অন্যকে অনুপ্রাণিত করা
ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আপনার লেখা বা আপনার সৃজনশীলতা দ্বারা আপনার অডিয়েন্স ত অপেন ফলোয়ারদের কে খুব সহজেই অনুপ্রাণিত করতে পারবেন। বর্তমানে অনেক নতুন ইউজার রয়েছে যারা অনলাইনে এসেই কোন না কোন ব্লগার বা সফল কোন ব্যক্তিকে ফলো করে থাকে এবং তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তারা অনলাইনে তাদের লাইফ সেটেল করতে পারে। তাই ব্লগিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই অন্যকে অনুপ্রাণিত করার মত জায়গা করা যায় খুব সহজেই।
শেষ কথা,,,
উপরের আলোচনা থেকে ব্লগিং সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারনা পেয়েছেন । আর যদি ভাবেন ব্লগিং করার জন্য এত কিছু করতে হবে তাহলে বলবো যে এসব বিষয় গুলো তেমন কঠিন কিছু না । আপনি যদি সামান্য ধারণা পেয়ে যান তাহলে এই সব বিসয়গুল খুব সহজেই করে ফেলতে পারবেন।
আরো পড়ুন: