সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
আমাদের দেশে প্রচুর ছেলে মেয়ের আগ্রহ আছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। এর মধ্য অনেকে জানেই না, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কি করতে হয়? তাদের ডেইলি লাইফ কেমন, কি কি কাজ করতে হয়? আমাদের দেশে এই সব নিয়ে তেমন কথা হয় না।
অনেকের কাছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং অনেক কুল একটা প্রফেশন। এখানে কাজ সব সময় ডেক্স এ বসে করতে হয়। সেভাবে ফিজিক্যাল শক্তি ব্যয় হয় না বললেই চলে। আবার অনেকের কাছে এটা একটা বোরিং প্রফেশন। এখন বাস্তবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রা কি করে সেটা নিয়ে আজকের ব্লগ। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রা লাইফ পার্টনার হিসাবেই বা কেমন?
সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। যেখানে সব কাজেই রয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। প্রযুক্তির উৎকর্ষসাধন ও ব্যাপক ব্যবহারের মূলে রয়েছে কম্পিউটার। নানাবিধ ব্যবহার, নিখুঁত কার্যক্ষমতা, দ্রুত গতি, অসীম তথ্যভাণ্ডার, সময় ও ব্যয় হ্রাস প্রভৃতি সুবিধার কারণে বর্তমানে প্রায় সব ধরনের কাজই কম্পিউটারনির্ভর হয়ে পড়েছে।
শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, বিনোদন, যোগাযোগ প্রভৃতি খাতে আজ কম্পিউটার একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যে সব প্রোগ্রাম রয়েছে যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজসম্পন্ন হয় তাকে বলা হয় সফটওয়্যার।
সফটওয়্যার তৈরি হয় ব্যবহারকারী প্রয়োজন অনুযায়ী তার কম্পিউটারে বিভিন্ন সফটওয়্যার ইনস্টল করে থাকে। যারা সফটওয়্যার তৈরি করেন এবং এর ব্যবহারগত সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করেন তাদের বলা হয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা নতুন নতুন ব্যবহার ক্ষেত্র, ব্যবহারে বৈচিত্র্য, বাজার চাহিদা, অধিকতর কার্যক্ষমতা ও আধুনিকতা প্রভৃতি মাথায় রেখে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সফটওয়্যার তৈরি করে থাকেন। এই কাজটিই করে থাকেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা। দিন দিন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সতুরাং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় পেশা হচ্ছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং।
আয়: সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং একটি সম্মানজনক বিশেষায়িত পেশা। তাই আয়ের সুযোগও এখানে অনেক। বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানিতে বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে নিয়মিত কাজ করলে গড়ে মাসিক পনের হাজার থেকে এক লাখ টাকা সম্মানী পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চুক্তিভিত্তিক কাজ বা নিজস্ব সফটওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে আপনার কার্যক্ষমতা অনুযায়ী আনলিমিটেড আয়ের সুযোগ রয়েছে।
একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে কত বছর লাগে ?
চার বছরের স্নাতক বিজ্ঞান ডিগ্রি: সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিজ্ঞানের স্নাতক ডিগ্রি নেওয়া উচিত চার বছর সম্পূর্ণ করতে, পূর্ণ-সময়। কিছু শিক্ষার্থী তাদের কোর্সওয়ার্ককে চ্যালেঞ্জিং মনে করতে পারে এবং তাদের শেখার এবং বোঝার জন্য আরও বেশি সময় বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে এখনও প্রায় চার বছরের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম হওয়া উচিত।
কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কত ?
একজন এন্ট্রি-লেভেল সিস্টেম সফটওয়্যার ডেভেলপার প্রায় আয় করতে পারেন বার্ষিক 460,000 এক বছরের কম অভিজ্ঞতা সহ। 1 থেকে 4 বছরের অভিজ্ঞতা সহ প্রারম্ভিক স্তরের সিস্টেম সফ্টওয়্যার বিকাশকারী প্রতি বছর প্রায় ₹531,792 পান। 5 থেকে 9 বছরের অভিজ্ঞতা সহ একজন মধ্য-স্তরের সিস্টেম সফ্টওয়্যার বিকাশকারী বার্ষিক ₹1,200,000 উপার্জন করেন।
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে শিখুন
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে শেখা অত্যন্ত জরুরি। একজন ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে তাকে ভালো প্রোগ্রামার হতে হবেই। এর জন্য এক বা একাদিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে এ আপনার দক্ষতা দরকার।যত বেশি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে আপনি জানবেন পেশা হিসাবে আপনার কাছে এটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে এর মধ্যে নিচের গুলি শেখা দরকার :
- Python
- JavaScript
- C#
- C++
- Ruby
- Java
এর মধ্যে Python,জাভাস্ক্রিপ্ট,CSS ,HTML আপনাকে জেনে রাখতে হবে। কোনো বেসিক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজে এগুলি অনেক ব্যাবহার হয়। এছাড়া ডাটা সাইন্স আর মেশিন লার্নিং ,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ক্ষেত্রেও Python,R এর ব্যাবহার অনেক।
আর যেহেতু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি কোর তথ্যপ্রযুক্তি এর মধ্যে পরে তাই এর জন্য বিষয় গুলি সবসময় আপডেট হতে থাকে। তাই আজকে আপনি যদি কোনো একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে এর একটি ভার্সন শিখলেন,সেটি আবারো কিছুদিন পরে আপডেট হলে শিখে নিতে হবে। তাই এই পরিবর্তন এর সাথে আপনাকে মানিয়ে নিতে হবে।
কোন আইটি কাজের চাহিদা রয়েছে ?
চাকরির বাজারে সঠিক দক্ষতাসম্পন্ন প্রযুক্তি পেশাদারদের উচ্চ চাহিদা রয়েছে।
এখানে 2022 সালে সবচেয়ে বেশি বেতনের কিছু আইটি চাকরি রয়েছে:
- ডেটা সায়েন্টিস্ট।
- ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) সলিউশন আর্কিটেক্ট।
- বিগ ডেটা ইঞ্জিনিয়ার।
- সফটওয়্যার স্থপতি.
- ব্লকচেইন ইঞ্জিনিয়ার।
- DevOps ইঞ্জিনিয়ার।
- ক্লাউড আর্কিটেক্ট।
- ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপার।
- কি কি বিষয় অবশ্যই পড়তে হয়?
- বিচ্ছিন্ন গণিত।
- ডেটা স্ট্রাকচার এবং অ্যালগরিটম।
- তথ্যশালা.
- সফ্টওয়্যার উন্নয়নের মৌলিক বিষয়।
- কম্পিউটার বিজ্ঞান পরিচিতি.
- অপারেটিং সিস্টেম।
- প্রোগ্রামিং ভাষার ধারণা।
- অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং.
- সফটওয়্যার আর্কিটেকচার এবং ডিজাইন।
- সফ্টওয়্যার পরীক্ষা এবং মানের নিশ্চয়তা।
- সিস্টেম বিশ্লেষণ.
- পদার্থবিদ্যা।
- ক্যালকুলাস
- সম্ভাব্যতা ও পরিসংখ্যান.
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর পর চাকরির সুযোগ
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর চাকরির সুযোগ হিসাবে দেশ বিদেশে অনেক আছে. দেশের মধ্যে বড় বড় IT কোম্পানি যেমন TCS ,IBM ,Accenture এ অনেক ভালো মানের চাকরি পাওয়া যায়। অনেক সময় কলেজ ক্যাম্পাসিং থেকে এই সুযোগ চলে আসে কোর্স করতে করতেই। তাই ভালো ভাবে কোর্স /ডিগ্রী শেষ করলে চাকরির অভাব হয় না।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলি
সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি পার্থক্য বৈশিষ্ট্য এটি উৎপাদনের কাগজটি। ডিজাইন পরিচালকদের এবং প্রযুক্তিগত কর্তৃপক্ষ দ্বারা সাইন আউট করা হয়, এবং গুণগত নিশ্চয়তার ভূমিকা কাগজ পথানুসরণ চেক হয়
অনেক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা স্বীকার করেন যে তাদের চাকরি 70 শতাংশ কাগজপত্র এবং 30 শতাংশ কোড। এটি একটি ব্যয়বহুল কিন্তু দায়ী সফ্টওয়্যার লিখতে উপায়, যা এক কারণ আধুনিক বিমান এভিওননিক তাই ব্যয়বহুল হয়।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং চ্যালেঞ্জ
নির্মাতারা বিমান, পারমাণবিক চুল্লী নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলির মত জটিল জীবন-সমালোচনামূলক সিস্টেম তৈরি করতে পারবেন না এবং সফটওয়্যারটি একসঙ্গে ছুঁড়ে ফেলতে চান। তারা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সফ্টওয়্যার প্রকৌশলী দ্বারা পরিচালিত করা প্রয়োজন যাতে বাজেটের অনুমান করা যায়, কর্মচারী নিযুক্ত এবং ব্যর্থতার ঝুঁকি বা ব্যয়বহুল ভুলগুলি কমিয়ে আনা যায়
এয়ারলাইন্স, স্পেস, পারমাণবিক শক্তি উদ্ভিদ, ঔষধ, ফায়ার শনাক্তকরণ সিস্টেম এবং বেলন কোস্টারের মতো নিরাপত্তা-সমালোচনামূলক এলাকায় যেমন ঝুঁকির কারণ রয়েছে তেমনি সফটওয়্যার ব্যর্থতার খরচও প্রচুর হতে পারে। সফটওয়্যার প্রকৌশলীের সমস্যাগুলি আশা করা এবং তাদের আগে আগেই এগুলি দূর করার ক্ষমতা অত্যন্ত জটিল।
আরো পড়ুন: