
পিসির জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
পিসির জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার বিষয়টাকে আমরা অনেকেই বেশ ‘হ্যাপা’-র কাজ মনে করি, মনে করি প্রচুর ‘প্যারা’ খেতে হয় ভিডিও এডিট করার জন্য। অনেকেই মনে করি, এর জন্য প্রয়োজন ভালো ক্ষমতার ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপ। সেই সাথে এটার মধ্যে ভালো সফটওয়্যারও ইন্সটল করে রাখা লাগবে ইত্যাদি ইত্যাদি! কিন্তু বিষয়টা আসলে মোটেই এমন নয়।
এই আর্টিকেলে আমি আলোচনা করবো ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে। ভিডিও এডিটিং কি, ভিডিও এডিটিং কিভাবে শিখব, ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার কী কী আছে ইত্যাদি নিয়ে আমাদের আলোচনা এগিয়ে যাবে সামনের দিকে।
ভিডিও এডিটিং কি ?
সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার Jared Nelson- এর মতে, Video editing is the process of piecing together video clips, images, and sounds to create a movie. অর্থাৎ, ভিডিও ক্লিপস, ছবি, অডিও ফাইল- এই সকল কিছু পাশাপাশি বসিয়ে যখন নতুন কোনো গল্প বলার উদ্দেশ্যে একটা নতুন ভিডিও তৈরি করা হয়, তখন সে প্রক্রিয়াকে ভিডিও এডিটিং বলে। এডোবি প্রিমিয়ার প্রো, ফিলমোরা- এমন কিছু সফটওয়্যার ভিডিও এডিটিং জগতে বেশ জনপ্রিয় সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
১. Adobe Premiere Pro সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

এডোবি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে অসাধারণ সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে একটি হলো এডোবি প্রিমিয়ার প্রো। এই সফটওয়্যার দিয়ে প্রফেশনাল লেভেলের সকল কাজই তুমি করতে পারবে। এটি একই সাথে উইন্ডোজ এবং ম্যাকওএস সার্পোটেড সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
সুবিধা:
১. সহজ ইন্টারফেস
২. বেশ কিছু টুল পাওয়া যায়, যা অন্য অনেক পেইড সফটওয়্যারে পাওয়া যাবে না
৩. অসংখ্য মাল্টিক্যাম এঙ্গেল ব্যবহার করা যায়
অসুবিধা:
১. প্রফেশনাল নয় এমন মানুষদের জন্য এই সফটওয়্যার কিছুটা কঠিন হতে পারে
২. কিছু কিছু ফিচার ব্যবহার করার জন্য অন্য সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে হয়, যেমন আফটার এফেক্ট কিংবা মিডিয়া এনকোডার।
৩. সাউন্ড এফেক্ট স্যাম্পল পাওয়া যায় না
২. CyberLink PowerDirector 365 সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

এই সফটওয়্যার তুমি একবার কিনে সবসময় ব্যবহার করতে পারবে, পরে নতুন করে কোনো সাবক্রিপশন চার্জের প্রয়োজন হবে না। PCMag এডিটরস চয়েসের শীর্ষে থাকা এই সফটওয়্যার দিয়ে তুমি সামান্য ভিডিও ট্রিম থেকে শুরু করে প্রো লেভেলের ভিএফএক্সের কাজও করতে পারবে। এর ইন্টারফেসটাও নব্য এডিটরদের জন্য বেশ সহজ সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
সুবিধা:
১. প্রজেক্ট খুব দ্রুত রেন্ডার করা যায়।
২. বেশ কিছু এফেক্ট এবং AI টুলস পাওয়া যায়
৩. মাল্টিক্যাম এবং মোশন ট্রাকিং করা যায়
৪. স্ক্রিন রেকর্ডিং এর সুবিধা আছে
অসুবিধা:
১. অনেক বেশি ফিচার থাকায় প্রথম দিকে বুঝতে অসুবিধা হতে পারে
৩. Corel VideoStudio Ultimate
এই সফটওয়্যারটি অনেক বেশি পরিচিত এর স্টপ মোশন টুলের কারণে। যারা ভিডিও এডিট করার সফটওয়্যার অপারেট করে অভ্যস্ত অর্থাৎ প্রফেশনাল, কিংবা ইউটিউবার- তাদের জন্য তৈরি করা। সাইবারলিংকের মতো এই সফটওয়্যারও তুমি একবার কিনে পরে সাবস্ক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে।
সুবিধা:
১. এখানেও ফাস্ট রেন্ডারিং সুবিধা আছে
২. থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি ভি আর, ফোর-কে আলট্রা এইচডি, এবং থ্রিডি মিডিয়া সাপোর্ট করে
৩. মাল্টিপয়েন্ট মোশন ট্র্যাকিং এর সুবিধা আছে, আছে স্টপ মোশন টুল
অসুবিধা:
১. অডিও এডিটিং ফিচার খুব বেশি সমৃদ্ধ না
২. হাই ডিপিআই মনিটরে তেমন ভালো চলে না
৪. DaVinci Resolve

সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার প্রোফেশনাল এবং নন প্রোফেশনাল- উভয় শ্রেণির কাছে এই সফটওয়্যার জনপ্রিয়। এর জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ হলো, সাবস্ক্রিপশন ছাড়াই এর অধিকাংশ ফিচার উপলভ্য। ‘এভাটার’, ‘ডিউন’- এমন বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা এই এডিটর ব্যবহার করেই এডিট করা।
সুবিধা:
১. সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু এডিটিং টুল বিদ্যমান
২. গোছানো ও সহজবোধ্য ইন্টারফেস
৩. অন্যান্য সফটওয়্যারে মোশন গ্রাফিক এবং অডিও এডিটিং টুল না থাকলেও এখানে তা পাওয়া যায়
অসুবিধা:
১. অনেকগুলো সিস্টেম রিসোর্সের প্রয়োজন
২. ইন্টারফেস সহজ হলেও এর অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি কিছুটা জটিল, আর তাই শেখাটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ।
৫. Movavi Video Editor Plus

শখের ভিডিও এডিটর এবং ইউটিউবারদের জন্য আদর্শ একটি পেইড সফটওয়্যার এটি। এখানে বেশ কিছু গুড-লুকিং এফেক্ট এবং ট্রানজিশন আছে, আছে সরাসরি ইউটিউব এবং ভিমোতে রেন্ডার করা ভিডিও আপ্লোডের অপশন। একবার কিনে বাকি জীবন ফ্রি ব্যবহার করা যায়, আর উইন্ডোজ এবং ম্যাকওএস- দু’টোর জন্যই সফটওয়্যারটি উপলভ্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
সুবিধা:
১. ক্রোমা-কি ক্যাপিবিলিটি আছে
২. মোশন ট্র্যাকিং এবং পিকচার-ইন-পিকচার টুল আছে
৩. সাউন্ড সহ ট্রানজিশন পাওয়া যায়
অসুবিধা:
১. রেন্ডারিং কিছুটা ধীর গতিতে হয়