
SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল কিভাবে লিখবেন ?
এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়ম । ব্লগ লেখার নিয়ম ২০২২
এসইও অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শব্দটার সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং শব্দটা যুক্ত থাকার জন্য সবাই মোটামোটিভাবে পরিচিত। “এসইও অর্থ সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, যা ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিকের পরিমাণ এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করবে”। তো আজকে আমরা আলোচনা করবো, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) কি এবং কিভাবে নতুন ওয়েবসাইটের জন্যে এসইও করতে হয়।
What is SEO?(এসইও কি ?)
এসইও হলো যে পদ্ধতিতে আপনার ওয়েবসাইটের পেজ বা পোষ্টকে একটা নির্দিষ্ট কি – ওয়ার্ড এর ভিত্তিতে সার্চের মাধ্যমে গুগল, ইয়াহু, বিং সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে প্রথম পর্যায়ে অবস্থান করানোর মাধ্যম।
কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ অনলাইন মার্কেটগুলো গুগোল সার্চ রেজাল্টের অসাধারণ কিছু অ্যালগোরিদম এর জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিন কে টার্গেট করে এসইও করে থাকে। কারণ বর্তমানে গুগলেই সব থেকে বেশি সার্চ করা হয়। অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলতে পারি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) হলো, সার্চ ইঞ্জিনের অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠায় আনার জন্য একটা প্রযুক্তিগত কৌশল।
সার্চ ইঞ্জিন কি ?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে সার্চ ইঞ্জিন হলো ইন্টারনেট কি-ওয়ার্ড এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ভাবে কোনো কিছু খোঁজার যেখানে কোনো কিছু লিখে সার্চ দিলেই আমরা নির্দিষ্ট কোন উত্তর বা তথ্য পেয়ে যাই। উদাহরণ হিসেবে গুগলে যেকোনো প্রয়জনে আমরা কিছু সার্চ করি। এখন প্রশ্ন থাকতেই পারে সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে ?
আপনার যেকোনো ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি পেজ ভিজিট করার মাধ্যমে সকল প্রকার ডাটাবেজ গুগল সার্চ ইঞ্জিন রোবট তাদের ডাটাবেজে সেভ করে রাখে এবং পরবর্তীকালে যখন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করা হয় তখন ইনডেক্সড ডাটা থেকে রেজাল্ট গুলো আমাদের সামনে চলে আসে।
আপনার ওয়েবসাইট যতটা এসিও ফ্রেন্ডলি করবেন সার্চ রেজাল্টে ততটাই প্রথমে আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যখন কোন মানুষ সার্চ ইঞ্জিনে নির্দিষ্ট কি – ওয়ার্ডের মাধ্যমে সার্চ করে থাকে তখন যে রেজাল্ট আসে সেখান থেকে সবথেকে প্রথমে ও উপরে আসার কারণ হলো তার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট এর মান অনেক সুন্দর সাজানো গোছানো এবং সর্বপরি এসিও ফ্রেন্ডলি করা। এবং সব থেকে ভাল মানের কনটেন্ট গুলোকেই সবথেকে উপরে দেখায় এভাবে আস্তে আস্তে নিচের দিকে বা পরবর্তী পেজে দেখাতে থাকে।
আর আপনার নিজের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় আনতে হলে এই এই সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। প্রথমেই জানতে হবে এসইও কত প্রকার ও কি কি।
আমরা সাধারণত জানি SEO (এসইও) দুই প্রকার।
১. অন পেজ এসইও / On page seo
২. অফ পেজ এসইও / Off page seo
তবে সঠিক ভাবে এসইও যে দুই প্রকার আছে তা হলোঃ
- অর্গানিক এসইও
- পেইড এসইও
অর্গানিক এসইও এবং পেইড এসইও কি ?
অর্গানিক এসইও বলতে বুঝায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর সকল রকম নিয়ম আপনি যদি সুন্দর ভাবে অনুসরণ করেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের পেজটা সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় দেখা যাবে। এবং পেইড এসইও ও বলতে বোঝায় আপনি গুগল কোম্পানি কে পেইড করবেন এবং আপনার পেজকে স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টের প্রথমে দেখাবে। আমরা অনেক সময় সার্চ করার পরে কিছু কিছু ওয়েবসাইটকে প্রথমে পাই যেগুলোর পাশে Ad (অ্যাড) লেখা থাকে এগুলো মূলত পেইড এসইও।
আর্টিকেল লেখার নিয়ম মেনে চলা কি বাধ্যতামূলক
প্রতিটি সেক্টরে প্রফেশনাল এবং ননপ্রফেশনাল বলে একটি বিষয় আছে। আপনি যদি একজন নন প্রফেশনাল ব্লগার হয়ে থাকেন। এর জন্য আপনাকে ব্লগ লেখার নিয়ম মেনে চলার কোন দরকার নেই।
কিন্তু একজন প্রফেশনাল ব্লগারকে অবশ্যই ব্লগ কিভাবে লিখতে হয় এটা মেনে চলা উচিত। আমি শিক্ষক হলে এটা আমার দ্বাতীয়তে আমি কিভাবে আমার ছাত্র/ছাত্রীদের ভালো বোঝাতে পারবো।
সুতরাং আপনি প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং করতে চাইলে এটা জানা দরকার যে কিভাবে ব্লগ লিখতে হয়। ব্লগ লেখার নিয়ম গুলো মেনে চলার কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে নিয়মের গুরুত্ব কত টুকু
দেখুন গুগল কিন্তু কোন মানুষ নয়। গুগল একটি সিস্টেম যেখানে একটি আর্টিকেলের লেখা বোঝার জন্য কত গুলো প্রোগ্রাম সাজানো আছে।
গুগল রোবর্ট আপনার ব্লগ পোষ্ট ভিজিট করার সময় বুঝতে পারে আপনার লেখাটি কোন বিষয়ের উপর এবং আপনি বিষয়টি কত টুকু ভালো ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছেন।
গুগল একটি ব্লগের প্রথম র্যাঙ্কটি এভাবেই প্রদান করে। আপনার লেখার কোয়ালিটি গুগল রোবর্ট বুঝতে পারে। এই কারনে আপনি কোন ব্লগ পোষ্ট একটি নিদিষ্ট সিস্টেম মেনে করেন তাহলে গুগল রোবর্টের বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।
আপনি কতটা স্মার্ট ভাবে কাজ করবেন এটা সম্পর্ন ভাবে আপনার উপর নির্ভরশীল। যত বেশি নিয়মের মধ্যদিয়ে কাজ করবেন তত বেশি সফলতা পাবেন।
দিন শেষ আমরা প্রতিটি মানষ সফলতা গল্প শুনতে পছন্দ করি। সফলতা শুধু কাজ করলে আসে না। একই সাথে আপনি কি ভাবে কাজ করছেন তার উপর নির্ভর করে।
আর্টিকেল টাইটেল
আর্টিকেল টাইটেল মানে হেডিং। আমরা কোন কিছু লেখার আগে যেমন একটি শিরোনাম ব্যবহার করি তেমনি হল ব্লগ টাইটেল। টাইটেল দেখে বুঝা যায় কোন ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
টাইটেল বিষয়টি আরও স্পস্ট করে বলতে হলে বলা যায় নিউজ পেপার লেখার শিরোনাম। তবে ব্লগ টাইলেট লেখার ক্ষেত্রে কিছু নিময় কানুন আছে।
- টাইটেলের মাধ্যে অবশ্যই যে বিষয়টি টার্গেট করে লিখতেছেন সেই বিষয়টি উল্লেখ্য করতে হবে।
- ব্লগের টাইটেল ৬০ ওয়ার্ডের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। আপনি চাইলে প্লাস বা মাইনাস করতে পারবেন সমস্যা নেই।
- টাইটেলের মধ্যে পাওয়ার ওয়ার্ড যোগ করুন। যেমন সেরা আইডিয়া, নতুন গল্প, সাল যোগ করতে পারেন, বাস্তাব অভিজ্ঞতা ইত্যাদি। পাওয়ার ওয়ার্ড লেখার টপিকের উপর ভিত্তি করে।
- টাইটেলের শুরুতে সংখ্যা যোগ করতে পারেন।
- অনেক ধরনের ভিজিটরকে টার্গেট করে টাইটেল লিখতে পারেন।
আর্টিকেল ইন্টারনাল এবং এক্সট্রানাল লিংক
একটি ব্লগ লেখার সময় প্রয়োজন অনুয়ায়ি ব্লগের অন্য লেখার সাথে বর্তমান লেখার সংযোগ করে দিতে হয়। একই আর্টিকেলের একটি লেখার সাথে অন্য লেখার সংযোগকে বলা হয় ইন্টারনাল লিংক।
একই ভাবে ব্লগের প্রয়োজনে অন্য কোন ব্লগের লিংক যুক্ত করতে হয়। যাতে করে ভিজিটর একটি তথ্য জানতে এসে তার সাথে রিলেটেড সকল তথ্য সম্পর্কে জানার জন্য উৎস খুঁজে পায়।
যেমন, আমি এই ব্লগ লেখাটি লেখার সময় অন্য অনেক ব্লগের সাথে এই লেখাটি যুক্ত করেছি। অন্য ব্লগের লিংক নিজের ব্লগের সাথে যুক্ত করাকে এক্সট্রানাল লিংক করা বলা হয়।
আর্টিকেল ইউজার ফ্রেন্ডলি করা
ইউজারকে বুঝানোর জন্য যে যে শব্দ গুলো বেশি ব্যাবহার করা দরকার সেগুলা বেশি করবেন এতে কোন সমস্যা হবেনা। অনেকেই মনে করেন যে, the, and, so ইত্যাদি শব্দ এবং Mix-Language গুলো যত কম ইউজ করা যায় ততই নাকি ভাল।
আসলেই ব্যাপার টা তেমন না। আপনার স্রোতাদের বুঝানোর জন্য যদি এই শব্দ গুলো বেশি ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই এগুলো বেশি ব্যবহার করবেন।
আপনি যে ইউজার ফ্রেন্ডলি করার জন্য কিছু কিছু শব্দ বেশি ব্যবহার করছেন, ২০১৯ তে এসে গুগলের রোবট এতটুক বুঝার ক্ষমতা রাখে।
মেইন কি-ওয়ার্ড আর্টিকেলে বডিতে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না
আর্টিকেলের বডি সেকশনে মেইন কি-ওয়ার্ড জোর করে দেওয়ার দরকার নেই। চেষ্টা করবেন কি-ওয়ার্ড এর সিনোনিমাস ইউজ করতে। যেমন আপনার কি-ওয়ার্ডটি যদি Android Phone User হয়, তাহলে আপনি – Smart Phone User, USA Android User এগুলো ইউজ করার চেষ্টা করবেন।
Head Tag এর সঠিক ব্যবহার করুন
আর্টিকেলের টাইটেলটি h1 ট্যাগে পাবলিশ হয়ে থাকে। তাই বডি সেকশনের হেডিং গুলো h2/h3/h4 এই কয়টার মধ্যে রাখলেই ভাল হয়। একটি আর্টিকেলে h1 ট্যাগ একবার ইউজ করা যায়, এর বেশি ইউজ করলে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল হয়না।
আমি আগেই বলেছি মেইন কি-ওয়ার্ড বডি সেকশনের যে কোন জায়গায় জোর করে ইউজ করার দরকার নেই, প্রয়োজন হলে ইউজ করবেন। আবার এমন যেন না হয়, মেইন কি-ওয়ার্ড ইউজ করা দরকার বাট আপনি করছেন না। চেষ্টা করবেন টেকনিক্যালি ইউজ করার।
আপনি বডি সেকশনে যে হেডলাইন গুলো হেড ট্যাগ h2/h3/h4 ইউজ করে লিখবেন, চেষ্টা করবেন হেডলাইনের ভিতরে মেইন কি-ওয়ার্ডটি রাখার। রাখতে না পারলে জোর করে রাখতে যাবার দরকার নেই।
অনেক সময় দেখা যাবে যে, আপনার হেডলাইন টোটাল ৫ টা, এর মধ্যে ৩ টাতে আপনি মেইন কি-ওয়ার্ডটি রাখতে পারছেন বাকি দুইটাতে পারছেন না। সমস্যা নেই, বাকি দুইটাতে রাখার দরকারও নেই। তবে চেষ্টা করবেন রাখার।
শেষ কথা,,
জানি না বিষয়টি কতটুকু ভালো ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছি। তবে চেষ্টা করেছি ব্লগ লেখার নিয়ম গুলো সম্পূর্ন ভাবে আলোচনার করার।
এর পরেও আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে আমাকে কন্ট্রাক পেজ থেকে মেইল করতে পারেন। আমি চেষ্টা করবো আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য।
আজকে এই পর্যন্তু ভালো থাকবেন।
আরো পড়ুন: