কোন মাদারবোর্ড এর সাথে কোন প্রসেসর লাগাবেন

Deal Score0
Deal Score0

কোন মাদারবোর্ড এর সাথে কোন প্রসেসর লাগাবেন এটা অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে। তারপরেও চলুন আজকে এই বিষয়য়ের উপরে আপনাকে একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করি।

কোন জেনারেশন এর প্রোসেসরের সাথে কোন জেনারেশনের মাদারবোর্ড সকেট সাপোর্ট করবে তা জানা অত্যন্ত জরুরী। যেমন Intel এর 6th gen থেকে নিয়ে সর্বাধুনিক 9th gen পর্যন্ত সবগুলোর সকেটই 1151। কিন্তু তাই বলে 6th gen এর মাদারবোর্ড 8th বা 9th gen এর বোর্ড সাপোর্ট করবেনা।

আপনি যেই কোম্পানির মাদারবোর্ড বা প্রসেসর ক্রয় করবেন। প্রথমে ওই কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যাবেন। তারপরে একটু খুঁজে দেখবেন তাদের ওয়েবসাইটে তাদের মাদারবোর্ড সম্পর্কে কোন ধরণের প্রসেসর লাগাতে বলা হয়েছে। অথবা মাদারবোর্ড এবং প্রসেসর সম্পর্কে তারা কি গাইডলাইন দিয়েছে। এগুলো খুঁজে নিয়ে মনজগ সহকারে পড়ুন।

আপনার যদি ওয়েবসাইটে গিয়ে এই সকল তথ্যগুলো খুঁজে পেতে কস্ত হয় বা খুঁজে না পান। তাহলে আপনি তাদের সাথে জগজগ করে সাপোর্ট নিন। এর জন্য আপনি তাদের ওয়েবসাইটের কনটাক্ট বা সাপোর্ট পেইজটি কাজে লাগাতে পারেন।

মাদারবোর্ড এর কাজ কি?

কম্পিউটারের প্রধান অংশ হলো মাদারবোর্ড তাই এটার অনেক গুলো কাজ করছে। নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

  • মাদারবোর্ডের যন্ত্র অংশ গুলো বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। যেমন মাইক্রো এটিএক্স, মিনি এটিএক্স ইত্যাদি।
  • কম্পিউটারের বিভিন্ন উপাদানে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠায়।
  • মাদারবোর্ড কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইস গুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে সাহায্য করে এবং তাদের মধ্যে একটি ইন্টারফেস তৈরি করে।
  • কম্পিউটারে মাদারবোর্ড কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া, মাদারবোর্ডে হার্ডডিস্ক, রেম (ram), সিপিইউ গুলোর মতো যন্ত্র গুলো কাছাকাছি ইনস্টল করা থাকে।
  • Motherboard এক রকমের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যার উপর নানা ধরনের এক্সপেনশন বা বিস্তারকারী শ্লটস থাকে।

মাদারবোর্ড কত ধরণের ও কী কী

গঠন এবং কাজ এর উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের মাদারবোর্ড মোট ৫ ধরনের। নিচে সেগুলো সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হলো।

  • Micro ATX Motherboard -মাইক্রো এটিএক্স মাদারবোর্ড।
  • Nano ITX Motherboard – ন্যানো আইটিএক্স মাদারবোর্ড।
  • Mini ATX Motherboard – মিনি এটিএক্স মাদারবোর্ড।
  • Standard ATX Motherboard – স্ট্যান্ডার্ড এটিএক্স মাদারবোর্ড।
  • Pico ITX Motherboard – পিকো আইটিএক্স মাদারবোর্ড।

মাদারবোর্ড বিভিন্ন অংশের নাম এবং মাদারবোর্ড পরিচিতি

মাদারবোর্ড কি বা মাদারবোর্ড কাকে বলে আশা করি এই বিষয় আপনি জেনে গেছেন। নিচের ছবিতে মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশের নাম দেখতে পাচ্ছেন। চলুন নিচে থেকে বিস্তারিত জেনে আসি।

  • সিপিইউ স্লট (CPU Slot)
    ১ নম্বরে আপনি দেখতে পাচ্ছেন সিপিইউ যেটা সাদা রঙ্গের চারকোনা একটি বোড। যেখানে সিপিইউ বা প্রসেসর বসানোর জায়গা।
    আপনি যদি মাদারবোর্ডে dule core, core i3, core i5 জেনারেশন বসাতে চান তাহলে এখানে বসাতে পারবেন।
  • সিপিইউ ফ্যান ও হিটসিংক মাউটিং (CPU fan & Heatsink munting points)
    ২ নম্বরে আপনি যেটা দেখতে পাচ্ছেন সেটার কাজ সিপিইউকে ঠান্ডা করার জন্য কুলিং ফ্যান বা হিটসিংক মাউটিং বসাতে হয়।
  • পাওয়ার সংযোজক (ATX Power connector)
    ৩ নম্বরে যেটা দেখতে পাচ্ছেন তার নাম পাওয়ার কানেক্টর। মাদারবোর্ডে যত ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার প্রয়োজন সেটা এই পিনের মাধ্যমে ট্রানফার করা হয়।
  • র‍্যাম স্লট (Ram slot)
    ৪ নম্বরে যে স্লট দেখতে পাচ্ছেন এখানে র‍্যাম ইনস্টল করতে হয়। এখানে আপনি ২ জিবি, ৪ জিবি র‍্যাম ইনস্টল করতে পারবেন। এখানে আপনি দুইটা স্লট দেখতে পাচ্ছেন যার ফলে ভবিষ্যতে র‍্যাম বৃদ্ধি করে নিতে পারবেন।
  • আইডিই সংযোগ (IDE connector)
    আগে এই ডিভাইসের সাহায্যে হার্ডডিস্ক বা অপটিক্যাল ডিভাইস করত কিন্ত বর্তমানে এই কানেক্টর আর ব্যবহার করা হয় না।
  • নর্থব্রিজ (Northbridge)
    এটা কাঁটার মতো দেখতে একে হিটসিংক বলা হয়। এটার নিচে ছোট ছোট মাইক্রোচিপ রয়েছে যাকে নর্থব্রিজ বলা হয়। যখন এই মাইক্রোচিপ গরম হয়ে যায় তখন হিটসিংক তাপ গ্রহণ করে নেয়।
  • এজিপি স্লট (AGP slot)
    এই স্লটে গ্রাফিক্স কার্ড ইনস্টল করতে হয়। আপনি যদি কম্পিউটার হাই গ্রাফিক্স গেম খেলতে চান তাহলে এখানে এক্সটার্নাল গ্রাফিক্স কার্ড ইনস্টল করতে হবে।
  • সাউথব্রিজ (Southbridge)
    এখানে অনেক গুলো ছোট ছোট মাইক্রোচিপ বসানো থাকে, যেগুলো গ্রুপ হয়ে একসাথে কাজ করে। এটাকে সাউথব্রিজ বলা হয়।
  • সিআইপি স্লট (CIP slot)
    আপনি সাদা যে ৫টি স্লট দেখতে পাচ্ছেন এগুলোকে বলা হয় সিআইপি স্লট। এখানে আপনি এক্সাট্রা সাউন্ড কার্ড, wifi card, ভিডিও কার্ড, নেটওয়ার্ক কার্ড ইত্যাদি যুক্ত করতে পারবেন।
  • সিমস ব্যাটারি (SMOS Battery)
    ১০ নম্বরে আপনি যে কালো গোল পোর্ট দেখতে পাচ্ছেন সেটাকে সিমস ব্যাটারি বলে। এই ব্যাটারির সাহায্যে কম্পিউটারের ডেট, টাইম আপডেট থাকে।
  • অডিও পোর্ট (Audio port)
    নীল, সবুজ এবং গোলাপি রঙের যে ৩টি পোর্ট দেখতে পাচ্ছেন এটাকে অডিও পোর্ট বা 3.1 অডিও জ্যাক বলে। এখানে আপনি হেডফোন, মাইক, স্পিকার যেকোনো কিছু লাগাতে পারবেন।
  • ইউএসবি পোর্ট (USB port)
    যেকোনো সাব ডিভাইস এই USB port ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন মাউস, কীবোর্ড, পেনড্রাইভ, মেমোরি কার্ড ইত্যাদি।
  • ইথারনেট পোর্ট (Ethernet port)
    ১৩ নম্বরে আপনি ৩টি পোর্ট দেখতে পাচ্ছেন। প্রথমটি হলো ল্যান পোর্ট এবং পরের দুইটি হলো ইথারনেট পোর্ট। কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ করতে হলে এই ইথারনেট পোর্টের মাধ্যমে ল্যান ক্যাবল কানেক্ট করতে হবে।
  • ইউএসবি পোর্ট (USB port)
    আমি ১২ নম্বরে একবার usb port এর কথা বলেছি। এর মাধ্যমে আপনি মেমোরি কার্ড, পেনড্রাইভ, কীবোর্ড, মাউস ইত্যাদি কানেক্ট করতে পারবেন।
  • প্যারালাল পোর্ট (parallel port)
    গোলাপি রঙের এই পোর্টকে বলা হয় প্যারালাল পোর্ট। এই পোর্টের মাধ্যমে আপনি যেকোনো প্রিন্টার কম্পিউটার সাথে যুক্ত করতে পারবেন।
  • ভিজিএ পোর্ট (VGA port)
    ভিজিএ পোর্টের মাধ্যমে কম্পিউটারের মনিটর বা LCD যুক্ত করতে হয়। vga port দেখতে কালো রঙের হয়।
  • কীবোর্ড স্লট (Keyboard slot)
    নীল রঙের এই স্লটের সাথে কীবোর্ড সংযুক্ত করা হয়।
  • মাউস স্লট (mouse slot)
    গোলাপি রঙের এই স্লটের সাথে কম্পিউটারের মাউস সংযোগ করা হয়।

উপরে আমি মাদারবোর্ড এ কি কি থাকে এবং বিভিন্ন অংশের নাম সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করেছি।

কোন প্রসেসরের জন্য কোন মাদারবোর্ড আপনার দরকার? তা বুঝার উপায় –

কিছু মাদারবোর্ড -Z170, H170, B150 or H110

Z170, H170, B150 এবং H110 চিপসেটের মেইনবোর্ড LGA1151 সকেটের Intel 6th Gen. প্রসেসর সাপোর্ট করে। আসুন জেনে নিই কোনটির কি বৈশিষ্ট্য।

  • H170 ওভারক্লকিং সমর্থন করে না। তাই ওভারক্লকার (K যুক্ত মডেল) প্রসেসরগুলো এই মাদারবোর্ডে লাগালেও ভালো পারফরমেন্স পাওয়া যাবে না। K ছাড়া i5, i7 মডেলগুলোর জন্য এই মেইনবোর্ড উপযোগী। অন্যান্য গেমিং ফিচারগুলো এতে পাওয়া যাবে। সাথে কিছু কিছু বিজনেস পিসির ফিচারও এতে পাওয়া যাবে।
  • Z170 চিপসেটের মাদারবোর্ডগুলো প্রসেসরকে ওভারক্লকিং করার সুযোগ দেয়। অর্থাৎ i5-6600K বা i7-6700K এর মতো ওভারক্লকিং প্রসেসরগুলো এ ধরনের মেইনবোর্ডের সাথে ভালো কাজ করবে। এ ছাড়া এগুলো Nvidia SLI ও AMD Crossfire সমর্থন করে। যারা Extreme গেমিং করতে চান তাদের জন্য এ ধরনের মেইনবোর্ড উপযোগী। তবে, বিজনেস পিসির কোন ফিচার এতে পাওয়া যাবে না।
  • B150 অপেক্ষাকৃত সরল ডিজাইনের মেইনবোর্ড যা ওভারক্লকিং সাপোর্ট করে না। এ ধরনের মেইনবোর্ডে সাধারণত ১টি গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা যায়। তবে কিছু কিছু মডেল একাধিক গ্রাফিক্স কার্ড সমর্থন করে। মূলত বিজনে পিসির জন্য উপযুক্ত হলেও মাঝারি মানের গেমিং পিসির জন্যও ভালো। i3 এবং Pentium প্রসেসরের সাথে এটি ভালো কাজ করবে।
  • H110 মূলত এন্ট্রি লেভেলের মেইনবোর্ড। Pentium এবং Celeron প্রসেসরের উপযুক্ত। এগুলোতে দুটোর বেশি র‍্যাম স্লট থাকে না।

মাদারবোর্ড নষ্ট হবার লক্ষণ কী কী তা যেনে রাখুন

কম্পিউটারে মাদারবোর্ড খুব গুরুত্বর্পূণ একটি জিনিষ। অবশ্যয় নাম শুনেই বুঝতে পারছেন তাঁর গুরুত্বটা কতটুকু।

মাদারবোর্ডেই পিসির অন্যান্য ডিভাইসের/যন্ত্রের সংযোগ। কম্পিউটার হলো এমন একটি জিনিস যেখানে একটা ইন্টার্নাল সমস্যার করনে আপনার পিসিটাই শেষ। অন হবেনা, যতক্ষন না সে সম্যাটা চিহ্নিত করে সমাধান না করেন। যাই হোক, এবার মূল প্রশ্নে আসি। মাদারবোর্ড নষ্ট হওয়ার অনেক লক্ষন থাকতে পারে।

যেমন-

১। মাদারবোর্ডে সিপিউ (প্রসেসর ) সকেটে কিছু পিন রয়েছে। এসব পিনের সাথে প্রসেসর আর মাদারবোর্ডের সংযোগ হতে না পারলে। কম্পিউটার অন হবে না। হলেও কিছুক্ষন পর অপ হয়ে যাবে। আগেই বলেছিলাম একটা জিনিষের অনুপস্থিতিতে আপনার পিসিটা অন হবেনা। যেহেতু পিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের ( প্রসেসর) অনুপস্থিত থাকতেছে। তাই আপনার পিসি অন হবেনা।

২। র‌্যামের সলেট নষ্ট। যেহেতু মাদারবোর্ডের সাথে সব ডিভাইসের সংযোগ থাকে। তাই র‌্যামেরও সংযোগ রয়েছে। কিন্তু মাদারবোর্ডর র‍্যাম সলেটে যদি কোনো পিনের সমস্য হয় তাহলে পিসি অন হবেনা। মাদারবোর্ড পরিবর্তন করতে হবে।

আমি উপরে দু’টি উদাহারন দিলাম। এরকম অনেক লক্ষন থাকতে পারে যার কারনে পিসি কাজ করতে পারেনা। তা, একজন মেকানিকের কাছে নিয়ে গেলে সে তা বাহির করে। মাদারবোর্ড পরিবর্তন করার পরামর্শ দিতে পারেন। মাদারবোর্ড যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা আগে থেকেই বুঝা যায়না।

যেমন- ৩ সাপ্তাহ জ্বর থাকলে বুঝা যায় জ্বক্ষা হয়েছে। সেটা তখন বুঝা যায়, যখন নষ্ট হয়ে যায়। তায়, মাদারবোর্ডে খুব সুক্ষন হাতে হাতে দিতে হয়। সমন্য ভুলে একটা পিন বাকা হয়ে গেলে মাদারবোর্ড পুরাই গেছে! আর মাদারবোর্ড রিফেয়ার করাও অনেকটা কঠিন।

ক্ষেত্রে বিশেষে ঠিক করা যায়না। তবে, যদি মাদারবোর্ডে ধুলো, বালি ঢুকতে না দেওয়া হয়। আর ধুলো, বালিগুলো পরিষ্কার করা হয় (বিশেষ পদ্বতিতে) তাহলে মাদরবোর্ড দীর্ঘদিন ভালো থাকব।

cobangla
We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply

Tech Topic Cobangla
Logo
Register New Account