কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি?

Deal Score0
Deal Score0

কম্পিউটার ভাইরাস এমন এক ধরণের প্রোগ্রাম, যা আমাদের কম্পিউটারে অযাচিত ভাবে ইন্সটল হয়ে বিভিন্ন ফাইল করাপ্ট, ফাইল চুরি, বিভিন্ন ডেটা চুরি এবং কম্পিউটার হ্যাক করে ফেলতে পারে। কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করলে আমাদের কম্পিউটারের এক্সেস হ্যাকার এর হাতে চলে যায়।

এছাড়াও, বর্তমানে এমন অনেক কম্পিউটার ভাইরাস তৈরি করেছে হ্যাকাররা, যেগুলো নিজে থেকে আমাদের কম্পিউটারে ইন্সটল হয়ে কম্পিউটারের এক্সেস নিয়ে নেয়। আমাদের দেহে যেমন বিভিন্ন ভাইরাস আক্রমণ করে আমাদের অসুস্থ করে ফেলে, তেমনি আমাদের বিভিন্ন ডিভাইস যেমন – কম্পিউটার বা মোবাইলে বিভিন্ন ভাইরাস আক্রমন করে আমাদের মোবাইলের এক্সেস নিয়ে হ্যাকার এর কাছে পাঠিয়ে দেয়। এতে করে আমরা আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারিয়ে ফেলতে পারি। অনেক কম্পিউটার ভাইরাস কম্পিউটারের তথ্য করাপ্ট করে সেগুলোর বিনিময়ে টাকা দাবী করে থাকে।

কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি?

প্রকারভেদ অনুযায়ী কম্পিউটার ভাইরাস কয়েক ধরণের হয়ে থাকে। কম্পিউটার ভাইরাস সাধারণত ৭ প্রকার। কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি তা নিচে উল্লেখ করে দিলাম।

  • Malware Virus
  • Adware Virus
  • Trojan Virus
  • Worms Virus
  • Overwrite Virus
  • Ransomware Virus
  • Spyware Virus

উপরে উল্লিখিত ৫ ধরণের ভাইরাস ছাড়াও আরও অনেক ধরণের কম্পিউটার ভাইরাস রয়েছে। এছাড়াও, প্রতিনিয়ত লক্ষাধিক নতুন ভাইরাস ধরা পড়ছে। ক্ষতি করার দিক থেকে Malware Virus, Trojan Virus এবং Ransomware Virus অনেক বিপদজনক।

Malware Virus
ম্যালওয়্যার এমন এক ধরনের সফটওয়্যার প্রোগ্রাম, যা আপনার কম্পিউটার, মোবাইল বা অন্য কোনো ডিভাইসে আপনার অনুমতি ছাড়াই তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারে। সেই কার্যক্রম হতে পারে আপনার গোপন তথ্য চুরি করা, আপনার উপর নজরদারি করা, আপনার ডিভাইসের কার্যক্ষমতা হ্রাস করা বা আপনার ডিভাইসে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সব ডাটা সমূহের ক্ষতিসাধন করা। সহজ ভাষায় ম্যালওয়্যার একটি ক্ষতিকর সফটওয়্যার।

Ransomware Virus
Ransomware Virus দিয়ে কম্পিউটারের সকল ফাইল করাপ্ট হয়ে যায়। র‍্যানসমওয়্যার এমন এক ধরনের ম্যালওয়্যার ভাইরাস, যা আপনার কম্পিউটার ডিভাইসকে আক্রমন করে কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে থাকা সবগুলো ফাইলকে এনক্রিপ্ট অর্থাৎ লক করে দিবে। আমাদের কম্পিউটারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল থাকে। ফাইল করাপ্ট হয়ে গেলে সেগুলো ফিরে পাওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। অনেক সময় এসব ফাইল আর ফিরে পাওয়া যায় না। ফাইল আগের মতো অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য হ্যাকাররা অনেক টাকা দাবী করে থাকে।

Trojan Virus
Trojan Virus আট্যাক করলে হ্যাকাররা আমাদের কম্পিউটারের এক্সেস নিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত সকল ফাইল এবং একাউন্ট নিজের কন্ট্রলে নিয়ে নিতে পারে। এই ভাইরাস হ্যাকাররা (hacker) তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এটা আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে মূল্যবান তথ্য গুলো চুরি করে নিতে পারে।

এমনই করে ম্যালওয়্যার ভাইরাস দ্বারাও হ্যাকাররা আমাদের কম্পিউটার হ্যাক করে অনেক ক্ষতি করে থাকে।

Adware Virus
আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় এসব ভাইরাস অটোমেটিক আমাদের কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে নিজে থেকে ইন্সটল হয়ে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন ধরণের অ্যাড অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করে। এসব বিজ্ঞাপন এই ভাইরাস কম্পিউটার থেকে না সরানো অব্দি রিমুভ করা যায় না। ইন্টারনেট থেকে কোনো কিছু ডাউনলোড করার সময় যাচাই করে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এতে করে বিভিন্ন ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারবে না।

Worms Virus
এই ভাইরাস কম্পিউটার সিস্টেমের মধ্যে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে যায় এবং নিজেদের কোড গুলো এমন ভাবে চেঞ্জ করে ফেলে যে আপনি কখনো খুঁজে বের করতে পারবেন না। তাই এই ভাইরাসকে self-replication বলা হয়।

Overwrite Virus
এই ভাইরাস গুলো কম্পিউটারে প্রবেশ করে ফাইল (file) গুলো ডিলিট করে দেয়। তাছাড়া ফাইল গুলোকে নিজের মতো এডিট (edit) করে কম্পিউটার সিস্টেমের ক্ষতি করে থাকে।

কিভাবে কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করে?

ভাইরাস তৈরি করে থাকে হ্যাকাররা। হ্যাকাররা বিভিন্ন অনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এই ধরণের ভাইরাস তৈরি করে থাকে। মানুষের পার্সোনাল এবং সোশ্যাল একাউন্ট, ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক করার জন্য, ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ ফাইল চুরি করার জন্য হ্যাকাররা বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার তৈরি করে থাকে। এসব ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারে বিভিন্ন উপায়ে প্রবেশ করতে পারে। কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করে এমন কিছু মাধ্যম নিয়ে নিচে আলোচনা করেছি।

ইউএসবি (USB) ডিভাইস
আমরা অনেক সময় ফাইল নেয়ার জন্য অনেকের কাছে থেকে পেন্ড্রাইভ বা ইউএসবি ডিভাইস নিয়। এসব ডিভাইসে ভাইরাস থাকলে সেগুলো আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করানোর সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করে। এভাবে করে এই ভাইরাস কম্পিউটারের বিভিন্ন ফাইল চুরি সহ একাউন্ট হ্যাক করে থাকে।

ইন্টারনেট থেকে
ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা অনেক ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে থাকি। কিন্তু, ট্রাস্টেড নয় এমন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করলে সেই ওয়েবসাইট থেকে আমাদের কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরণের ম্যালওয়্যার নিজে থেকে ডাউনলোড হয়ে যায়। এভাবে করে এসব ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং সিস্টেমের ক্ষতি সাধন করে থাকে।

ইমেইল এর মাধ্যমে
অনেকেই এটা শুনে অবাক হতে পারেন, তবে ইমেইলের মাধ্যমে বেশিরভাগ একাউন্ট হ্যাক হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ইমেইলের মাধ্যমে হ্যাকাররা বিভিন্ন এটাচমেন্ট পাঠিয়ে থাকে, যেগুলো ওপেন করলে ভাইরাস নিজে থেকে ডাউনলোড হয়ে কম্পিউটারে ইন্সটল হয়ে যায় এবং এর ফলে অনেকেই তাদের অনেক ব্যক্তিগত এবং গুরুত্বপূর্ণ একাউন্ট এর এক্সেস হারিয়ে ফেলে। অচেনা বা আন-অথোরাইজড কোনো মেইল থেকে ইমেইল আসলে, মেইল ওপেন না করাই উত্তম। এতে করে হ্যাকিং এর শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ গুলো কি কি?

আমাদের কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রমন হয়েছে কি না তা জানার জন্য বিভিন্ন লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবো। কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি।

  • কম্পিউটার নিজে নিজে কাজ করে।
  • চলতে চলতে হঠাৎ হ্যাং হয়ে যায়।
  • সিস্টেম ইরর (error) দেখায়।
  • স্লো কাজ করে।
  • সেভ করা ফাইল গুলো নিজে নিজে ডিলিট হয়ে যায় এবং কিছু ফাইল ওপেন হয় না।
  • হঠাৎ অ্যাপ্লিকেশন ওপেন হয় এবং বন্ধ হয়।
  • নিজে নিজে রিস্টার্ট নেয়।

কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রমন করলে এসব লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে। কারণ, এখন এমন অনেক ম্যালওয়্যার হ্যাকাররা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যেগুলো দীর্ঘদিন আমাদের কম্পিউটারে লুকিয়ে থেকে কম্পিউটারের সিস্টেমের ক্ষতি করলেও আমরা বুঝতে পারবো না। এজন্য সমাধান হচ্ছে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করা। এন্টি ভাইরাস কি এবং সেরা ১০ টি ফ্রি এন্টিভাইরাস থেকে যেকোনো এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করে আপনার কম্পিউটার সুরক্ষিত রাখতে পারেন।

cobangla
We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply

Tech Topic Cobangla
Logo
Register New Account