গেম খেলে কি কি ক্ষতি হয় সম্পূর্ণ জানুন | Know all the harms of playing games.
গেম খেলে কি কি ক্ষতি হয় সম্পূর্ণ জানুন | Know all the harms of playing games
ফ্রী ফায়ার বর্তমানে তরুণ সমাজের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি ভিডিও গেম। বর্তমান তরুণ সমাজ এই ফ্রি ফায়ারে তাদের প্রত্যেক দিনের 24 ঘন্টার মধ্যে 10 ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় করছে। এটা চরম অবনতি বলা চলে। বাংলাদেশের ব্যাপক সংখ্যক তরুণ ফ্রী ফায়ার ব্যবহার করছে। এবং তারা আরো বন্ধুদের ফ্রী ফায়ার এর প্রতি আসক্ত করার চেষ্টা করছে।
এখন ঘটনা এরকম দাঁড়িয়েছে আপনি রুমে শুয়ে আছেন, হঠাৎ শুনতেছেন পাশের বাসায় বা রুমে থেকে একজন চিৎকার করে বলছে, মার! মার! গুলি কর! গুলি কর! কেউ আবার বলছে ভাই আমাকে বাঁচাও! সত্যি এসব কথা শুনে সকলেই আঁতকে উঠবে! তাই আসুন ফ্রী ফায়ার গেম খেলে কি কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে একটু জেনে নেই
ফ্রী ফায়ার গেম ক্ষতিকর দিক
যেকোন নেশায় আমাদের ক্ষতি করে। সোজা কথা ফ্রী ফায়ার খেলা যেমন একটি নেশা পরিণত করে, তাই ফ্রী ফায়ার গেম খেলা ক্ষতিকর। ফ্রী ফায়ার গেম খেলে সমাজের নৈতিক অবক্ষয় হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এই গেমে শুধুমাত্র মারামারি খুনাখুনি এগুলো করা হয়। এগুলো দেখে বাস্তব জীবনেও কেউ এ পথে চলে যাচ্ছে। তাছাড়া ফ্রী ফায়ার এ ডায়মন্ড কেনার জন্য অনেকেই বিভিন্ন অন্যায় মূলক কাজ করছেন।
- সামাজিক অবক্ষয়।
- পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি।
- মেধা শক্তি লোপ পায়।
- সাংসারিক কাজ কর্মের ক্ষতি হয়।
- পারিবারিক অশান্তির তৈরি হয়।
- ঘুম কম হয়।
- ক্লাসে অমনোযোগী হওয়া।
- নৈতিক চরিত্র অবক্ষয়।
- অযথা অর্থ নষ্ট হয়।
- ক্ষতি হয় ব্রেনের,
- ক্ষতি হয় চোখের,,
- ক্ষতি হয় স্বাস্থ্যের,
মোবাইল গেমে শিশু-কিশোর ও যুবকদের মস্তিস্কে খুবই খারাপ প্রভাব ফেলছে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা লেখা পড়া বাদ দিয়ে কেউ কেউ অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। পাবজি-ফ্রি ফায়ার, ফেসবুক, ইন্টারনেট, ম্যাসেঞ্জার, টিকটকেই এখন তাদের ব্যস্ত সময় কাটে।
বিভিন্ন দোকান, মোড়ে ও শহরের অলিগলিতে ব্রডব্যান্ড লাইনের ফ্রি ওয়াই-ফাই, বিভিন্ন ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে দৈনন্দিন কর্মকান্ড বাদ দিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়। মাঝে মধ্যে অভিভাবকরাও এ আসক্তিতে বুদ হয়ে থাকতে দেখা যায়। এ মুহুর্তে সচেতন অবিভাবকরা সচেতন না হলে ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে মনে করেন সুধিজনরা।
ফরিদপুরে জেলা সদর সহ সকল উপজেলার প্রায় সকল এলাকায় মোড়ে মোড়ে, দোকানের সামনে, খেলার মাঠেসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে যে, পাবজি-ফ্রি ফায়ার, ফেসবুক, ইন্টারনেট, ম্যাসেঞ্জার, টিকটকে ব্যাস্ত সময় পার করছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীরা।মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটার দুটোতেই খেলা যায় এই গেম।
গেমিং মানসিক সমস্যার সাথেও যুক্ত হয়েছে। ভিডিও গেম আসক্তি, বা ইন্টারনেট গেমিং ডিসঅর্ডার গেমিং একটি মানসিক সমস্যা কিনা এটি এখনো একটি জটিল প্রশ্ন। আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে,আইজিডি 12 মাসের গবেষণায় গেইমিংয়ের কিছু ভালো,খারাপ বিষয় উঠে এসেছে
1 গেমিং আসক্তির কারণে অন্যান্য কাজে আগ্রহ হারানো
2 গেমিং আসক্তির কারণে সম্পর্ক, শিক্ষাগত বা ক্যারিয়ারের সুযোগ হারানো
3 উদ্বেগ, অপরাধবোধ বা অন্যান্য নেতিবাচক অবস্থা থেকে বাঁচতে বা মুক্তি দিতে গেমিং
4 গেমিং আসক্তির কারণে কখনো কখনো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়া
আমেরিকান জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রির এক জরিপে দেখা গেছে, 0.3% থেকে 1.0% আমেরিকানদের মধ্যে ইন্টারনেট গেমিং ডিসঅর্ডার থাকতে পারে। এই সমস্যার চিকিৎসা হলো নিজেকে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে সম্পৃক্ত করে নেয়া । পড়াশোনা,চাকরি বাকরি,ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি মনোযোগী হওয়া। ওই সমস্ত গ্রুপ থেকে নিজেকে বর্জন করা যে গ্রুপগুলো ভিজিট করলে আপনার ভিতরে গেম খেলার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
গেমিং আসক্তির কারণে ঘুমের সমস্যা অনিদ্রা,হতাশা,আগ্রাসন এবং উদ্বেগের সৃষ্টি হতে পারে, (যদিও এই বিষয়গুলোতে কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানো জটিল) অনেক সময় ভিডিও গেমে এ দেখা যায় যে চরম সহিংসতার,নিসংসতা এই বিষয়গুলি কিছু কিছু উৎসুক তরুণকে সহিংসতার জন্য অস্থির করে তুলতে পারে।
ভিডিও গেমস এবং মস্তিষ্কের পরিবর্তন
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি তাদের করা 116 টি গবেষণা পর্যালোচনা করে এই মতামত প্রকাশ করেছেন ” ভিডিও গেম গুলি কখনো কখনো প্রশংসিত আবার কখনো এগুলো খুবই অদ্ভুত বেশিরভাগ ভিডিও গেম বাস্তবের সাথে মিল নেই গেমিং একটি জনপ্রিয় ক্রিয়া-কলাপ তাই সবার এটির বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে” লেখাটি হিউম্যান নিউরোসায়েন্সের ফ্রন্টিয়ার্সে প্রকাশিত হয়েছিল।
গবেষক টিম সমস্ত গবেষণা পর্যালোচনা করে এই ব্যাপারটি বুঝার চেষ্টা করেছিলেন ভিডিও গেম কিভাবে মস্তিষ্কের গঠন এবং ক্রিয়া কে প্রভাবিত করে গবেষণা পরিচালনায় মোট বাইশটি মস্তিষ্কের কাঠামোগত পরিবর্তনগুলি অন্বেষণ করেছেন এবং 100 টি গবেষণায় মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং আচরণের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গবেষণার ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে ভিডিও গেম খেলে আমাদের মস্তিস্ক কীভাবে কার্য সম্পাদন করে তা নয় কেবল তাদের গঠনও পরিবর্তন করে।
আরো পড়ুন: