মাদারবোর্ড কি? মাদারবোর্ড কত প্রকার এবং এর কাজ কি ?
মাদারবোর্ড কি ? মাদারবোর্ড কত প্রকার এবং এর কাজ কি ?
বর্তমান সময়ে যারা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, তাদের সকলের জানা উচিত মাদারবোর্ড কি। যারা এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে চান। তারা একদম সঠিক ওয়েবসাইটে এসেছেন।
কারণ আজ আমাদের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানাব, মাদারবোর্ড কি? মাদারবোর্ড কত প্রকার এবং এর কাজ কি?
আপনি যদি উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। তাহলে আমাদের দেওয়া আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে পড়ুন।
বর্তমান সময়ে কম্পিউটার এর মতো অধিকাংশ ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র গুলো বিদ্যুৎ এর সাহায্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে চলে থাকে।
আর সেটি আমারা সবাই জানি যে, কম্পিউটার মাদারবোর্ড এর সমস্যা হলে কম্পিউটার সাময়িক ভাবে নষ্ট হয়ে যায়।
বিদ্যুৎ শক্তির উপর ভিত্তি করে উক্ত যন্ত্র যে, বৈদ্যুৎতিক শক্তি সরবারহ ব্যবস্থা করা থাকে। সেই ব্যবস্থা প্রথমে পরবর্তী তড়িৎ প্রবাহ কে অল্প ভোল্টেজ এর সমতড়িৎ প্রবাহে পরিণত করে কম্পিউটারের মাদারবোর্ডে প্রেরণ করে।
উক্ত বিদ্যুৎ শক্তি কম্পিউটার মাদারবোর্ড গ্রহণ করে, কম্পিউটার এর সকল অংশকে এক সাথে যুক্ত করে একটি একক প্লাটফর্ম তৈরি করে থাকে।
যে সকল প্লাটফর্ম কম্পিউটার এর মেমোরি স্টোরেজ, হার্ড ড্রাইভ, ভিডিও কার্ড, সাউন্ড কার্ড, সিপিইউ, অপটিক্যাশ ড্রাইভ ছাড়াও আরো অনেক কার্ড কে সরাসরি তারের মাধ্যমে সংযুক্ত করে রাখা হয়।
আজ এই আর্টিকেলে মাদারবোর্ড সম্পর্কে সম্পুন্ন সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। তো চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
মাদারবোর্ড কি?
মাদারবোর্ড হচ্ছে মুল সার্কিট বোর্ড যা সিপিইউ, স্টোরেজ ডিভাইস, গ্রাফিক্স কার্ড, সাউন্ড কার্ড সহ কম্পিউটারের যাবতীয় হার্ডওয়ার গুলোর হোম বেইজ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এর মুল কাজ হচ্ছে বিভিন্ন যন্ত্রত্রাংশের মধ্যে ইলেকট্রনিক যোগাযোগ স্থাপন করানো।
আর একটা ভালো মাদারবোর্ড, রিয়াল টাইম এই সংযোগের কাজটি খুবই ভালো ভাবেই সম্পন্ন করে। মাদারবোর্ডের কোন একটা কাজ ব্যবহৃত হলে আপনার কম্পিউটার সঠিক ভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিবে। কারন এটাই হচ্ছে পুরো কম্পিউটারের বেইজ।
এর কাজ গুলো নিম্নরূপঃ
১ঃ এটা একটা কম্পোনেন্ট হাব – এখানে সব ধরনের এক্সটার্নাল হার্ডওয়ার সংযুক্ত থাকে, যেমন র্যাম, হার্ডডিস্ক, সিডি ড্রাইভ ইত্যাদি। এই জন্য এটাকে Component Hub বলা হয়ে থাকে।
২ঃ পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন করা – পাওয়ার সাপ্লাই থেকে মাদারবোর্ডে পাওয়ার আসে, এবং মাদারবোর্ড সেটা সঠিক ভাবে বিভিন্ন হার্ডওয়ারের ডিস্ট্রিবিউট করে দিয়ে থাকে।
৩ঃ বিভিন্ন স্লটস – এখানে অনেক গুলো স্লট থাকে, যাতে আমরা নানা ডিভাইস বা ইন্টারফেস ইন্সটল করতে পারি। আমাদের প্রয়োজন অনুসারে, নানা সময় নানা ডিভাইস ইন্সটল করা লাগে কম্পিউটারে। মাদারবোর্ডে সব গুলোর স্লটই থাকে।
৪ঃ BIOS – মাদারবোর্ডে ROM বা BIOS থাকে, যা আমাদের কম্পিউটার বুট করার জন্য খুবই জরুরি।এছাড়া ও আরো অনেক খুঁটিনাটি এবং সুক্ষ কাজ করে থাকে মাদারবোর্ড।
মাদারবোর্ড কত প্রকার ও কি কি?
মাদারবোর্ড তার গঠন এবং কাজের উপর নির্ভর করে মুলত ৫ প্রকারে ভাগ হয়। এখন আমরা এখানে জানবো সেই প্রকার গুলো কি কিঃ
- স্ট্যান্ডার্ড এটিএক্স মাদারবোর্ড – Standard ATX Motherboard
- মাইক্রো এটিএক্স মাদারবোর্ড – Micro ATX Motherboard
- মিনি আইটিএক্স মাদারবোর্ড – Mini ATX Motherboard
- ন্যানো আইটিএক্স মাদারবোর্ড – Nano ITX Motherboard
- পিকো আইটিএক্স মাদারবোর্ড – Pico ITX Motherboard
মাদারবোর্ড এর বিভিন্ন অংশের বর্ণনা
এখানে আমরা মাদারবোর্ডের মুল কিছু অংশ নিয়ে কথা বলবো, যা না থাকলে একটা পিসি সম্পুর্ন অচল হয়ে যাবে। এই অংশ গুলো মাদারবোর্ডের সাথে ইনগ্রেটেড থাকে অথবা এক্সটার্নাল হিসেবে ও কিনতে হয়। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশ সম্পর্কেঃ
1. CPU – Central Processing Unit
CPU বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট হচ্ছে একটা মাইক্রো-প্রসেসর বা প্রসেসর যা কম্পিউটারের ব্রেইন হিসেবে পরিচিত। এটাই মুলত কম্পিউটারের সমস্ত লজিক্যাল ক্যালকুলেশন যেমন ফেচিং, ডিকোডিং কিংবা প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিং করে থাকে। এর প্রসেসর চিপের ধরন নির্ভর করে আপনি কি ব্র্যান্ড এবং কি টাইপের মাদারবোর্ড কিনলেন তার উপর। একেক ধরনের মাদারবোর্ডের গঠন পদ্ধতি এবং সকেটগুলোর লোকেশন ও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
2. RAM – Random Access Memory
র্যাম বা র্যান্ডম এক্সেস মেমোরি কম্পিউটারের এমন একটি ডায়নামিক মেমোরি যা আমাদের কাজকে সাময়িকভাবে স্টোর করে এবং কাজের গতি বৃদ্ধি সহ ইউজিং এক্সপেরিয়েন্সকে উন্নত করে। এটাই মুলত কম্পিউটারের মুল মেমোরি যেখানে চালু হওয়া প্রোগ্রাম গুলো নিজেদের ডাটা জমা রেখে একটিভেট থাকে।
কম্পিউটার একবার অন অফ করলে র্যামে থাকা সমস্ত তথ্য মুছে যায় এবং এটা আবার নতুনভাবে কাজ করা শুরু করে। এই জন্য এটাকে volatile মেমোরি ও বলা হয়ে থাকে।
সিপিইউ স্লট
সিপিইউ স্লট নামে যে অংশটির নাম দেখছেন এটি একটি সাদা রঙের চার কোনো একটি বোড। সেখানে সিপিইউ বা প্রসেসর যুক্ত করা হয়।
আপনি যদি মাদারবোর্ড Corei3, Core i5 বা Dule Core জেনারেশন যুক্ত করতে চান তাহলে উক্ত স্থানে যুক্ত করতে পারবেন।
সিপিইউ ফ্যান এবং হিটসিংক মাউটিং
সিপিইউ ফ্যান ও হিটসিংক মাউটিং এর কাজ হলো সিপিইউকে ঠান্ডা রাকার জন্য কুলিং ফ্যান এবং হিটসিংক মাউটিং যুক্ত করা হয়।
পাওয়ার সংযোগ
পাওয়ার সংযোগ এর মাধ্যমে মাদারবোর্ডের সকল ইলেকট্রনিক পাওয়ার দরকার হয় সেটি উক্ত পিনের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হয়।
র্যাম স্লট
র্যাম স্লট মাদারবোর্ডে ইনস্টল করা হয়। এখানে আপনি ২ জিবি, ৪ জিবি, ৮ জিবি র্যাম ইনস্টল করতে পারবেন। আর আপনি যদি বেশি টাকা খরচ করে আরো বেশি জিবি লাগাতে চান তাও পারবেন।
নর্থব্রিজ
নর্থব্রিজ এটি কাটার মতো এদখতে একে হিটসিংক বলা হয়। এটির নিচে ছোট ছোট মাইক্রোচিপ আছে। যাকে নর্থব্রিজ বলা হয়। আর যখন এই মাইক্রোচিপ গরম হয় তখন হিটসিংক তাপ গ্রহণ করে থাকে।
এজিপি স্লট
এজিপি স্লট এর মাধ্যমে গ্রাফিক্স কার্ড ইনস্টল করা হয়ে থাকে। আপনি যদি কম্পিউটার হাই গ্রাফিক্স গেম খেললে আগ্রহী থাকেন তাহলে এক্সটার্নাল গ্রাফিক্স কার্ড ইনস্টল করতে পারবেন।
সাউথব্রিজ
সাউথব্রিজ অনেক গুলো ছোট ছোট মাইক্রোচিপ বসানো থাকে। যে গুলো গ্রুপ হয়ে একসাথে কাজ করে। এটিকে সাউথব্রিজ বলা হয়।
সিআইপি স্লট
সিআইপি স্লট এর মাধ্যমে এক্সাট্রা সাউন্ড কার্ড, ওয়াইফাই এবং বিভিন্ন ধরণের কার্ড যুক্ত করতে পারবেন।এগুলো ছাড়া আরো অনেক অংশ মাদারবোর্ড যন্ত্রে সংযোক্ত থাকে। সেগুলো আমি সংক্ষিপ্ত ভাবে নাম বলেছি দিচ্ছি দেখুন।
- SMOS Battery
- Audio port
- USB port
- Ethernet port
- parallel port
- VGA port
- Keyboard slot
- mouse slot
উক্ত যন্ত্র অংশ গুলো মাদারবোর্ড এর সাথে সংযোক্ত থাকে। আর উক্ত যন্ত্র গুলো একত্রিত হয়ে একটি কম্পিউটারে রুপান্তরিত হয়।আপনি যদি উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে থাকেন। তাহলে মাদারবোর্ড সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারছেন।
শেষ কথাঃ
আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানানো হলো, মাদারবোর্ড কি? মাদারবোর্ড কত প্রকার এবং মাদার বোর্ড এর কাজ কি? আপনি যদি উক্ত বিষয় গুলো ভালো ভাবে অনুসরণ করে থাকেন। তাহলে আপনিও সঠিক তথ্য জেনে নিয়েছেন।
আর আপনার যদি মাদারবোর্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার বন্ধুর সাথে পোস্ট গুলো শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন: